একের পর এক ব্যর্থতা, কোহলির নেতৃত্ব নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
ঠিক আট বছর আগে এই ২৩ জুন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির টিম ইন্ডিয়া (Team India)। আট বছর বাদে সেই একই দিনে সাউদাম্পটনে মুখ থুবড়ে পড়ল বিরাট কোহলির (Virat Kohli) ভারত। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে (World Test Championship Final) হতশ্রী পারফরম্যান্স করে নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) কাছে হারতে হল ভারতকে। সেই সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটে কোহলিদের বিশ্বসেরা দল হওয়ার স্বপ্নও আছড়ে পড়ল বাস্তবের রুখা সুখা জমিতে।
২০১৯ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে এই নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেই ভারত ছিটকে গিয়েছিল বিশ্বকাপ থেকে। নাটকীয়তায় মোড়া ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হার মানতে হয় নিউজিল্যান্ডকে। ট্র্যাজিক নায়ক হন কিউয়ি অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। এদিন তিনি হাসছেন। আর তাঁর বন্ধু কোহলির মুখ গম্ভীর।
হেরে গিয়ে কোহলি তুলে দিলেন সেই অমোঘ প্রশ্ন, আইসিসি টুনামেন্টে খেলতে নামলে কী হয় কোহলির? কেন বারবার ব্যর্থ হন তিনি? সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর নেতৃত্ব নিয়েও কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে গেল।
অথচ তাঁর পূর্বসুরি ধোনি তো সেই ‘মিডাস রাজা’র মতো। যা ধরেছেন তাতেই সোনা ফলিয়েছেন। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছেন। ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ এবং ২০১৩ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও তাঁর ঝুলিতে। সেখানে কোহলি কোনও আইসিসি ট্রফি ঘরে তুলতে পারেননি। তাঁর ক্যাবিনেটে নেই বড় কোনও ট্রফিও। ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে একের পর এক রেকর্ড গড়লেও ক্যাপ্টেন হিসেবে আসল ম্যাচে হার মানছেন তিনি।
আট বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার জন্য আইসিসি সম্মান জানিয়েছে ধোনিকে। অথচ কোহলিকে মাথা নীচু করে বুধবার মাঠ ছাড়তে হল। তাঁর ব্যাটও জ্বলে উঠল না বৃষ্টিবিঘ্নিত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। বিরাট কোহলি মানেই তো তাঁর ব্যাট কথা বলে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে কিউয়িদের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে করলেন ৪৪ রান। আর দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৩ রান করে প্যাভিলিয়নের রাস্তা নিলেন। অথচ দ্বিতীয় ইনিংসে বিরাটকে দরকার ছিল দেশের। সেই সময়ে তাঁর চলে যাওয়া নিউজিল্যান্ডকে চালকের আসনে বসিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। কোনও সন্দেহই নেই তাতে।
আইসিসি-র কোনও টুর্নামেন্টেই চাপের মুখে নিজের আসল খেলা তুলে ধরতে পারেন না কোহলি। এটা তাঁর নামের পাশে বারংবার লেখা হয়ে যাচ্ছে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারত তাকিয়েছিল কোহলির চওড়া ব্যাটের দিকে। কোহলি করেন মাত্র ১ রান। চার বছর বাদের বিশ্বকাপেও কোহলির দিকেই তাকিয়েছিল দেশ। হতাশ করেন তিনি। কিউয়িদের বিরুদ্ধে করেছিলেন মাত্র ১ রান। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে মাত্র ৫ রান করেছিলেন কোহলি। সেবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের কাছে হারতে হয়েছিল কোহলির ভারতকে। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও ক্যাপ্টেন কোহলি ব্যর্থ ট্রফি জিততে। চাপের মুখে বারবার ‘চোক’ করে যাচ্ছেন কোহলি। মানতে না চাইলেও এটাই প্রমাণিত।