মিলল না কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমতি, রাষ্ট্রপতির কাছে যাচ্ছে না বঙ্গ বিজেপি
কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কি অনুমোদন দিচ্ছে না? জবাবে দিলীপবাবু জানিয়েছেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এ ব্যাপারে আমার কোনও কথা হয়নি। এমনকী অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বলিওনি।’
Authored By:

রাজ্যের শাসক দলকে আরও কোণঠাসা করাই ছিল লক্ষ্য। সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কয়েক সপ্তাহ আগে রাজ্য বিজেপি ঘটা করে ঘোষণা করেছিল, বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে শীঘ্রই রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হবে। কিন্তু তা কার্যত ব্যুমেরাং হয়ে গিয়েছে দলের জন্যই। কারণ বড় মুখ করে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ কর্মসূচির ঘোষণা করা হলেও এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে একবিন্দুও এগতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি (BJP)। যার জেরে দলের অন্দরেই রীতিমতো প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। জানা যাচ্ছে, পার্টি কর্মীদের একাংশ জানতে চাইছে, কর্মসূচি রূপায়ন করাই যদি সম্ভব না হয়, তাহলে ঘটা করে তা ঘোষণা করা হচ্ছে কেন? বিজেপির খবর, এ নিয়ে এখনও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমোদনই পায়নি বঙ্গ বিজেপি। এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা।
বিজেপি সূত্রের খবর, এই অনুমোদন প্রশ্নে গেরুয়া শিবিরের কেন্দ্র এবং রাজ্য পার্টির মধ্যে মতবিরোধ আরও তীব্র হয়েছে। সবমিলিয়ে একটিমাত্র কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ব্যাপারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে কোনও প্রতিনিধি দল পাঠাইনি। তবে একই ইস্যুতে বঙ্গ বিজেপির প্রতিনিধিরা রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছে। দল আদালতের দ্বারস্থও হয়েছে। এমনকী বিভিন্ন কমিশনের কাছেও এই সংক্রান্ত একাধিক তথ্য আমরা পাঠিয়েছি। যেহেতু বিষয়গুলো বর্তমানে কোর্টের আওতাধীন, তাই আপাতত রাষ্ট্রপতির কাছে আমরা যাচ্ছি না।’ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কি অনুমোদন দিচ্ছে না? জবাবে দিলীপবাবু জানিয়েছেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এ ব্যাপারে আমার কোনও কথা হয়নি। এমনকী অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বলিওনি।’
দিলীপবাবুর এই মন্তব্যকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল। তাদের মতে, বিজেপির রাজ্য সভাপতির মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট যে, বহু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমোদনের তোয়াক্কা পর্যন্ত করতে চাইছে না রাজ্য বিজেপি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মতবিরোধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনিতেই বাংলার ভোটে ভরাডুবির পর সংগঠন নিয়েই উৎসাহ হারিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আপাতত উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতের মতো রাজ্যে আগামী বছরের গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতেই বেশি সময় ব্যয় করতে চাইছেন তাঁরা। যদিও আগামী ২৯ জুন রাজ্য বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ ভার্চুয়াল বৈঠকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাও উপস্থিত থাকতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তাঁর সামনে বাংলার ভোট বিপর্যয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা যেমন হবে, তেমনই দিল্লিতে বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচি নিয়েও কথা হতে পারে। অন্যদিকে, বাংলা ভাগ নিয়ে মন্তব্য করে মঙ্গলবার রাতে নাড্ডার কাছে ধমক খেয়ে বুধবার সুর অনেকটাই নরম করেছেন বিজেপি এমপি সৌমিতিJরি খাঁ। এদিন দিল্লিতে তিনি বলেছেন, ‘এটা একেবারেই আমার ব্যক্তিগত মত ছিল। পার্টির বক্তব্য নয়। তবে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, উপেক্ষা থেকেই এসব কথা বলা।’