জুলাই থেকেই তৃণমূলের ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি কার্যকর হতে চলেছে
একুশের নির্বাচনে জয়ের পর সংগঠনে একাধিক রদবদল করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এবার সেই পর্যায়ে আরও এক ধাপ, অর্থাৎ ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি রাজ্যব্যাপী কার্যকর হতে চলেছে জোড়াফুল শিবির। জুলাই মাসের গোড়াতেই জেলার সংগঠনে রদবদল হবে বলে তৃণমূল ভবন সূত্রে খবর। সেক্ষেত্রে ওই নীতি বলবৎ হওয়ার ফলে একাধিক মন্ত্রীকে ছাড়তে হবে জেলা সভাপতির পদ।
২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে বাংলায় হ্যাটট্রিক করেছে তৃণমূল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এখন থেকেই ঘর গোছাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। সংগঠনের যেটুকু ফাঁকফোকর রয়েছে, তা ভরাটের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দলকে আরও শক্তিশালী করতে শাখা সংগঠনে বদল এনেছেন তৃণমূল নেত্রী। বিধানসভা নির্বাচনের পর ৫ জুন প্রথম সাংগঠনিক বৈঠক হয় তৃণমূল ভবনে। যেখানে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়—দু’জনেই এই নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এই নীতি মোতাবেক এক মাসের মধ্যে জেলায় রদবদল করা হবে বলে জানানো হয়। ইতিমধ্যে দলীয় নেতৃত্ব একপ্রস্থ আলোচনাও সেরে ফেলেছেন। রবিবার কালীঘাটে গিয়ে দলনেত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে জেলা সভাপতি বদল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তুঙ্গে।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, স্বপন দেবনাথ, সৌমেন মহাপাত্র, পুলক রায়রা একদিকে যেমন মন্ত্রী, তেমনই তাঁরা রয়েছেন জেলা সভাপতির পদেও। ফলে তাঁদের একটি পদ ছাড়তে হবে। সেক্ষেত্রে বদল হবে জেলা সভাপতি। সব মন্ত্রীই একবাক্যে জানিয়েছেন, দল ‘এক ব্যক্তি এক পদ’-এর নীতি প্রকাশ্যেই জানিয়েছে। ফলে রদবদলের ক্ষেত্রে দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত। আমরা তা মেনে নেব।
বিধানসভা নির্বাচনে দার্জিলিংয়ে ভালো ফল হয়নি তৃণমূলের। সেখানকার পাহাড় ও সমতলে তৃণমূলের সংগঠনে রদবদল হচ্ছে বলে খবর। ফলে সেখানকার সভাপতি বদল নিয়ে দলের অভ্যন্তরে চর্চা বিস্তর। এছাড়াও আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি জেলার সংগঠনকে শক্তিশালী করার বিষয়ে দলীয় নেতৃত্ব বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছেন। গত লোকসভা নির্বাচনের পর এবার বিধানসভা ভোটেও উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় ভাল ফল করেছে বিজেপি।
তবে বাংলা দখলের স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় বিজেপির জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সামনে আসছে। এই পরিস্থিতিতে আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপি সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা গেরুয়া শিবির ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। ফলে জল্পনা শুরু হয়েছে তাঁকে নিয়েও। সংগঠনে রদবদল উত্তরবঙ্গেও যে করবে তৃণমূল।