কমল দৈনিক মৃত্যু, রাজ্যে দাপট কমছে করোনার
করোনা (Covid 19) মহামারীর দাপট আরও কমল রাজ্যে। শনিবারের তুলনায় রবিবার দৈনিক মৃত্যু আরও কমল। শনিবারের বুলেটিনে ৩২ জনের মৃত্যুর উল্লেখ ছিল। রবিবার তা কমে হয়েছে ২৯। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে ১৪টি জেলাতেই করোনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। এর মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে আটটি এবং উত্তরবঙ্গের ছ’টি জেলা রয়েছে। বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনাই ঘটেছে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা সহ সন্নিহিত জেলাগুলিতে। শুধু তাই নয়, সরকারি-বেসরকারি, সরকার অধিগৃহীত সব মিলিয়ে প্রায় ৩৬ হাজার (৩৫,৮৫৫) করোনা বেডে রোগী আছেন মাত্র ২৬৫৬ জন, অর্থাৎ মাত্র ৭.৭৫ শতাংশ। পজিটিভিটিও কমে হয়েছে ৩.৩৪ শতাংশ।
স্বাস্থ্যদপ্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটির এক সদস্য বলেন, এই নিয়ে গত ছ’দিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১৮৭৯, ১৮৫২, ১৯২৫, ১৯৩৩, ১৮৯৪ ও ১৮৩৬। আর এইখানেতেই অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে সকলকে। কারণ, অদ্ভূতভাবে কমবেশি আঠারোশোর ঘরেই দৈনিক সংক্রমণ থাকছে। রেখচিত্রে বিষয়টি অনেকটাই একটি মালভূমির মতো। ইউরোপ, আমেরিকায় দেখা গিয়েছে, এরপরই ধীরে ধীরে সেই গ্রাফ উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে। তাই আগামী দু’সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এরপর সংক্রমণের রেখচিত্র আরও কিছুটা নীচে হাজারের ঘরে নেমে একেবারেই নিস্তেজ হয়ে যেতে পারে। সেটাই মত অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই হয়ে যাওয়া তৃতীয় ঢেউয়ের গতিপ্রকৃতি লক্ষ্য করে তাঁরা দেখেছেন, দ্বিতীয় ঢেউ শেষ হতে না হতেই সেটি শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোনওভাবেই দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো ভয়ঙ্কর হয়নি। তার একটি অন্যতম কারণ, অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষজনেরই টিকাকরণের পালা শেষ হয়েছে।
বর্তমানে ইংল্যান্ড, কানাডা প্রভৃতি দেশে ৭০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যারই টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। সেখানে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচুর প্রচার হলেও ভারতে এখনও পর্যন্ত নামমাত্র মানুষ টিকা পেয়েছেন। সুতরাং অনেকেরই সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা ষোলো আনা। ফলে এখানে তৃতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি ইউরোপ, আমেরিকার বহু দেশের সঙ্গেই মিলবে না। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, এদিন রাজ্যের ২ লক্ষ ৯৫ হাজার ৮০১ জন টিকা পেয়েছেন। সবশুদ্ধ ২ কোটি ৮ লক্ষ ৮৮ হাজার ৪৪১ জন টিকা পেয়েছেন। দু’টো ডোজই পেয়েছেন ৪৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ১২৫ জন। আজ স্বাস্থ্যসচিব, পর্যটন সচিব, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সচিব প্রমুখ পদস্থ কর্তারা বিভিন্ন বণিকসভা ও সংগঠনের সঙ্গে এরপর টিকাকরণ কীভাবে চলবে, তা নিয়ে বৈঠকে বসবেন। নির্দেশ অনুযায়ী, আজ সোমবার কোনও শিবির খুলে টিকা দেওয়া হবে না।