রাজশেখর বসু – বাংলা সাহিত্যের পরশপাথর

১৯৫৫ সালে সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ “কৃষ্ণকলি ইত্যাদি’ গল্প গ্রন্থের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত করে। ‘আনন্দীবাঈ ইত্যাদি” গল্প রচনার জন্য তিনি ১৯৫৬ সালে ভারতে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৩৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত বানান সংস্কার সমিতি ও ১৯৪৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিভাষা সংসদের সভাপতিত্বও করেন।

March 16, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বিপুল বৈচিত্রময় জীবন ছিল তাঁর। একাধারে রসায়নবিদ ও রসসাহিত্যিক হওয়া সত্ত্বেও, কোনও স্মৃতিকথা বা জীবনচরিত লেখেননি রাজশেখর বসু। রাজশেখরের গল্প পড়ে প্রফুল্লচন্দ্র মন্তব্য করেছিলেন, “এই বুড়া বয়সে তোমার গল্প পড়িয়া হাসিতে হাসিতে choked হইয়াছি।” ১৯৫৫ সালে সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ “কৃষ্ণকলি ইত্যাদি’ গল্প গ্রন্থের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত করে। ‘আনন্দীবাঈ ইত্যাদি” গল্প রচনার জন্য তিনি ১৯৫৬ সালে ভারতে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৩৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত বানান সংস্কার সমিতি ও ১৯৪৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিভাষা সংসদের সভাপতিত্বও করেন। 

১৯৫৭-৫৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে তাঁকে ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়। এছাড়াও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক “ডক্টুরেট’ উপাধি প্রদান করে। ১৯৫৬ সালে ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত করে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৪০ সালে তাঁকে ‘জগন্তারিণী’ এবং ১৯৪৫ সালে ‘সরোজিনী” পদক দেয়।

প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে তিনি কেমিস্ট্রি নিয়ে এমএ পাশ করেন৷ ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে রাজশেখর কলকাতার রিপন কলেজ থেকে বি.এল পাশ করে মাত্র তিন দিন আইন ব্যবসা করেছিলেন। কিন্তু বিজ্ঞান চর্চায় তাঁর অধিক আগ্রহ থাকায় আইন ব্যবসা ছেড়ে তিনি স্যার আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ১৯০১ সালে প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস’ – ১৯০৩ সালে থেকে আজীবন রাজশেখর এই কোম্পানীর সঙ্গেই নিযুক্ত ছিলেন৷

রাজশেখরের সাহিত্য জীবন শুরু হয় ১৯২০-র দশকে। ১৯২২ সালে ‘পরশুরাম’ ছদ্মনামে তিনি একটি মাসিক পত্রিকায় “শ্রী শ্রী সিদ্ধোশ্বরী লিমিটেড” নামে একটি ব্যঙ্গ রচনা প্রকাশ করেন। গল্পরচনা ছাড়াও স্বনামে প্রকাশিত কালিদাসের মেঘদুত, বাল্মীকি রামায়ণ (সারানুবাদ), কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসকৃত মহাভারত (সারানুবাদ), শ্ৰীমদ্ভগবৎ গীতা ইত্যাদি ধ্রুপদী ভারতীয় সাহিত্যের অনুবাদগ্রন্থগুলিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। 

১৯৩৭ সালে প্রকাশিত হয় রাজশেখর বসু বিরচিত বাংলা অভিধান চলস্তিকা। গড্ডালিকা, কজ্জলী, হনুমানের স্বপ্ন সহ তিনি মোট ২১টি গ্রন্থ প্রকাশ করেন৷ তাঁর লেখা ছোটগল্প ‘বিরিঞ্চিবাবা” অবলম্বনে বিশিষ্ট চলচিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায় “মহাপুরুষ” ছবিটি নির্মাণ করেন৷ ১৯৬০ সালের ২৭ এপ্রিল স্ট্রোক আক্রান্ত হয়ে ঘুমের মধ্যেই শেষ নিশ্বাস করেন তিনি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen