কৃষক মঞ্চে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতিদের হামলা, ধুন্ধুমার
দিল্লি সীমানায় (Delhi Border) কৃষকদের আন্দোলন অবস্থানে এবার ‘হামলা’ বিজেপি (BJP) কর্মী-সমর্থকদের। এমনই অভিযোগ করল ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন (বিকেইউ) (BKU)। সংগঠনের নেতা রাকেশ টিকায়েত (Rakesh Tikait) বলেছেন, ‘বিজেপির ঝান্ডা হাতে শ’দুয়েক লোক বিক্ষোভরত কৃষকদের (Farmers) উপর হামলা চালিয়েছে। অন্তত ১৫ জন কৃষক গুরুতর জখম হয়েছেন।’ বুধবার দিল্লি-উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর সীমানায় বিজেপি বনাম কৃষক মঞ্চের সংঘর্ষে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, ‘আন্দোলনের নামে কৃষকরা দলীয় নেতার উপর হামলা চালিয়েছে। বিজেপি নেতা-কর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। বহু সমর্থক আহত হয়েছেন।’ অন্যদিকে, রাকেশ টিকায়েত অভিযোগ করেছেন, ‘গাজিপুর সীমানায় কৃষকদের আন্দোলন মঞ্চ দখল করার চেষ্টা করছে বিজেপি। বিগত তিনদিন ধরে গাজিপুর সীমানায় আন্দোলনরতদের উদ্দেশে লাগাতার গালিগালাজ করে চলেছে বিজেপির সমর্থকরা। পুলিস ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’ ঘটনার প্রতিবাদে গাজিয়াবাদ এসএসপি অফিসে ঘণ্টা দুয়েক ধর্নায় বসেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও পুলিসে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনার পরেই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা ধৈর্য রাখছি ঠিকই, কিন্তু কেউ যেন সীমা লঙ্ঘন না করেন। তার ফল ভালো হবে না। ক্রমাগত আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনসংযোগের দায়িত্ব রয়েছে আমাদের। কিন্তু রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী গ্রামে ঢুকতেই পারছেন না। কিছু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য কৃষক শব্দের পবিত্রতাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি নিন্দনীয়।’ কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিগত সাত মাস ধরে দিল্লির সীমানাগুলিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা। গত ২৬ জুন কৃষকদের আন্দোলনের সাত মাস পূর্তিতে ট্রাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে একপ্রস্থ ধুন্ধুমার হয়েছে। তার কয়েকদিনের মধ্যেই যেভাবে বুধবার গাজিপুর সীমানায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা কেন্দ্রের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ। এদিনের ঘটনার পরই পুলিস দিয়ে কার্যত মুড়ে ফেলা হয় গাজিপুর সীমানা। থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। সংযুক্ত কিষান মোর্চা অভিযোগ করেছে, ‘বিজেপি-আরএসএস আশ্রিত গুন্ডারাই আন্দোলনরত কৃষকদের উস্কানি দিয়েছে। কৃষকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অশান্ত করতে নোংরা খেলায় মেতেছে গেরুয়া শিবির।’
এমনকী এদিন আন্দোলনরত কৃষকদের উপর পাথর ছোড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
জানা যাচ্ছে, বিজেপি নেতা অমিত বাল্মিকীকে স্বাগত জানানোর জন্য গেরুয়া শিবিরের প্রচুর নেতা-কর্মী, সমর্থক গাজিপুর সীমানার ইউপি গেটের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। অন্যদিকে, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি মেনে সীমানায় হুল ক্রান্তি দিবস পালন করছিলেন কৃষকরা। অশান্তি ছড়ায় দু’পক্ষের ওই জমায়েতকে কেন্দ্র করেই। বিজেপি নেতাকে কৃষকরা কালো পতাকাও দেখিয়েছেন। সংযুক্ত কিষান মোর্চার অভিযোগ, ‘কৃষকদের উস্কানি দিতেই আন্দোলন মঞ্চের সামনে জড়ো হয়েছিলেন বিজেপি কর্মীরা। সন্ত্রাসবাদী, বিশ্বাসঘাতক, খলিস্তানির মতো শব্দ আউড়ে একটানা কৃষকদের উদ্দেশে গালিগালাজ করা হচ্ছিল। তারই প্রতিবাদ কৃষকরা করেছেন। আর সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলন মঞ্চের দিকে লাঠি, ঝান্ডা হাতে তেড়ে এসেছেন বিজেপি কর্মীরা। ছোড়া হয়েছে পাথর।’ রাকেশ টিকায়েতের প্রশ্ন, ‘কৃষকদের মঞ্চ থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে বিজেপি নেতাকে স্বাগত জানানোর প্রয়োজন হল কেন?’