উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

বিজেপির বাংলাভাগের ডাকের পরেই উত্তরবঙ্গে নাশকতার ছক কেএলওর

July 6, 2021 | 2 min read

বিজেপির বাংলাভাগের প্রচ্ছন্ন হুমকির পরেই উত্তরবঙ্গে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কামতাপুর লিবারেল অর্গানাইজেশন (KLO)। নিষিদ্ধ এই জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতা জীবন সিং নাশকতার হুমকি দিয়ে একাধিক ভিডিও বার্তা ও ফুটেজ প্রকাশ করছেন। জোট বাঁধছে উত্তরবঙ্গে নবগঠিত সংগঠন গ্রেটার কোচবিহার লিবারেশেন অর্গানাইজেশনও। এই আবহেই নতুন ক্যাডার নিয়োগ থেকে শুরু করে অস্ত্র সংগ্রহ শুরু করেছে কেএলও। অভিযোগ, অস্ত্র আনতে চীনা মদতও পাচ্ছে নিষিদ্ধ এই জঙ্গি সংগঠন। ব্যবসায়ীদের কাছে তোলা চেয়ে ফোন যাচ্ছে কেএলও প্রধানের। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, অস্তিত্ব জাহির করতে এবার উত্তরবঙ্গে বড়সড় নাশকতা করাই লক্ষ্য কেএলওর। যাতে সাধারণ মানুষকে সন্ত্রস্ত করা যায়। কীভাবে, কার নেতৃত্বে, কোথায় হবে নাশকতা? এই তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চলছে।

গোয়েন্দাদের কাছে আসা খবর অনুযায়ী, নিম্ন অসমে রীতিমতো ‘রিক্রুটমেন্ট ড্রাইভ’ শুরু করেছে কেএলও। চলছে ‘ইন্টারভিউ’। সূত্রের খবর, কেএলও চিফ জীবন সিং মায়নামারের রাখাইনে বসে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া দেখভাল করেছেন। ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রত্যেক ক্যাডারের ইন্টারিভঊ নিয়েছেন। সদ্য নিযুক্ত তরুণদের প্রত্যেকের গড় বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এই দলে অসমের কোকরাঝাড়, বঙ্গাইগাঁও, গোঁসাইগাঁওয়ের পাশাপাশি কোচবিহারের বেশ কিছু তরুণও রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। গোয়েন্দারা বলছেন, গত বছর মে মাসে এভাবেই একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল কেএলও। কোকরাঝাড় জেলার চক্রশীলা রিজার্ভ ফরেস্টের মধ্যে ওই ক্যাম্প সেনা-পুলিসের যৌথ অভিযানে ভেস্তে যায়। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া বিজেপির (BJP) বঙ্গভাগের আস্ফালনের পর ফের শুরু হয়েছে।

এদিকে, নাশকতার হুমকি দিয়ে কেএলও প্রধানের পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে লাইক আর শেয়ারের বন্যা বইছে। তাতে কেএলও এবং জীবন সিংয়ের জয়গান থেকে শুরু করে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করা হয়েছে। কারা এই পোস্টগুলি সমর্থন করে কেএলওর জয়গান করছে, তাদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, নাশকতার লক্ষ্যে কেএলও ধাপে ধাপে এগচ্ছে। অস্ত্র ভাণ্ডারকে মজবুত করতে জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন (আইএম)-এর কাছ থেকে অস্ত্র কিনছে। গোয়েন্দারা বলছেন, চলতি বছরের গত ২ মার্চ অস্ত্রশস্ত্রের প্রথম কনসাইনমেন্টটি চীনের কুনমিং হয়ে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম, তারপর মায়ানমারের রাখাইনে পৌঁছেছে। গোয়েন্দারা বলছেন, কুনমিং থেকে অস্ত্র প্রথমে আসে মায়ানমার লাগোয়া বাংলাদেশের মোনাখালি সমুদ্রতটে। সেখান থেকে দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা ও জঙ্গলের পথ ধরে তা পৌঁছয় পার্বত্য চট্টগ্রামের থানচি। এরপর মিজোরাম লাগোয়া পারভা হয়ে রাখাইনের জঙ্গলে এনএসসিএন (আইএম)-এর ক্যাম্পে। কনসাইনমেন্টের সমস্ত অস্ত্রই চীনের অস্ত্র কারখানা ‘নরিনকোর’ তৈরি। এনএসসিএন (আইএম)-এর কাছ থেকে ওই কনসাইনমেন্টের একটি অংশ কিনেছে কেএলও। যার মধ্যে রয়েছে এম ১৬ রাইফেল, চাইনিজ পিস্তল, টি ৫৬ (ওয়ান) সাব মেশিন গান, সেমি অটোম্যাটিক নাইন এমএম পিস্তল, টি ৬৯ রকেট লঞ্চার। অস্ত্র সংগ্রহে চীনের এই ভূমিকার প্রেক্ষিতে কেএলওর সঙ্গে জিনপিংয়ের দেশের যোগসূত্রের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা। গোটা বিষয়টি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#North Bengal, #bjp, #KLO

আরো দেখুন