কেউ কমিউনিটি কিচেন চালাচ্ছেন, কেউ চাল চুরি করছে 

এখন রাজনীতির সময় না, একজোট হয়ে লড়ার সময়। সব দল, সব দর্শন তো মানুষের কল্যাণের কথাই বলে। তাহলে মানবসমাজ যখন বড় বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়েছে, তখন রাজনৈতিক দলগুলো কিছুদিন পতাকা গুটিয়ে একজোট হয়ে কাজ করলে অসুবিধে কি?

April 28, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

এখন রাজনীতির সময় না, একজোট হয়ে লড়ার সময়। সব দল, সব দর্শন তো মানুষের কল্যাণের কথাই বলে। তাহলে মানবসমাজ যখন বড় বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়েছে, তখন রাজনৈতিক দলগুলো কিছুদিন পতাকা গুটিয়ে একজোট হয়ে কাজ করলে অসুবিধে কি?

অনেক মানুষ প্রশ্ন করছেন, তৃণমূল নেতাদের কেউ কি বলতে পারে না, ওহে, এটা মহামারি। এখন চাল চুরির সময় নয়। এর পরেই খবর পাওয়া গেল সরকারি মিটিংয়ে খাদ্যমন্ত্রী আধিকারিকদের কাছে অনেক কিছু জানতে চেয়েছেন। মন্ত্রী কী জানতে চাইলেন? মন্ত্রী এক অফিসারকে বলছেন, তোমার তিন-চারটে জায়গায় এসআর-এ কে আছে? মণিরুল, তোমার উত্তর দমদম কামারহাটি-এইখানে বিভিন্ন ভাটপাড়া, হালিশহরে কাউন্সিলাররা গিয়ে চাল তুলছে কী করে? সব জাযগার কাউন্সিলাররা চাল তুলছে। কালকে আমি ১০ বস্তা ফেরত করিয়েছি উত্তর দমদমে। কাউন্সিলার চাল তুললেই তো কনজিউমারকে কম দেবে। ও কোথায় পাবে? হালিশহর, ভাটপাড়া, টিটাগড়, কামারহাটি, উত্তর দমদম তুমি নজরদারি করো। আমাকে জানাও। আমি ব্যক্তিগতভাবে এদের সঙ্গে কথা বলব। বাগদায় প্রচুর আটা কম দিচ্ছে। মিনাখাঁয় আটা যাচ্ছে না। বাগদায় এক প্যাকেট করে কম প্রত্যেককে দিচ্ছে। হেলেঞ্চায় হচ্ছে। বাগদা প্রপারে হচ্ছে। সিন্দ্রানিতে হচ্ছে। রানাঘাটে হচ্ছে। তোমার এই সব জায়গায় এক প্যাকেট করে আটা কম।

কেউ কমিউনিটি কিচেন চালাচ্ছেন, কেউ চাল চুরি করছে

জানা গেল, কলকাতা থেকে পড়ুয়াদের একটি দল বাঁকুড়ায় ত্রাণ দিতে গিয়েছে। সেখানে এক গ্রামে তাঁদের সঙ্গে এক মহিলার দেখা হল। ইটভাটা বন্ধ হওয়ায় ঘরে ফিরেছেন। সম্বল সব ফুরিয়েছে। প্রতিবেশীরা দুচারদিন চালিয়ে দিয়েছেন। তারপর অর্ধাহার-অনাহারের জীবন। এরকম অনেক ভূমিহীন, দিনমজুর রয়েছেন ওই সব এলাকায়। অনেকের ব়্যাশন কার্ডও নেই। পড়ুয়াদের তাঁরা শুধু বলেন, আমাদের একটা কাজ দাও, যে কোনও কাজ। অর্থাৎ কিছু মানুষ চাল চুরি করছেন, আর কিছু মানুষ চাল-ডাল জোগাড় করে জেলায় জেলায় কমিউনিটি কিচেন চালাচ্ছেন।

গরীব মানুষ যে আলাদা আলাদা দলীয় রঙে বিভক্ত হয়ে গিয়েছেন, সে তো নতুন কথা নয়। এখন তো সব ভোটেই দেখবেন, গরীব মানুষ নিজেদের মধ্যে মারামারি করেন। যাঁরা গ্রামীণ সমাজে নিয়ন্ত্রণ কার্যে রাখতে ভোট লুঠ করেছেন, তাঁরাই যদি গরীব মানুষকে খাবারের জন্য পার্টি অফিসের উপর নির্ভরশীল করে তোলেন। তুমি যদি ব়্যাশনের চাল লুঠ করে দলের পতাকা লাগিয়ে পছন্দের মানুষের মধ্যে বিলি করো, গরিব মানুষের ব়্যাশন কার্ড জমা রাখো, কুপন বিলি করার সময় আনুগত্য বিচার করো, তাহলে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে কি করে চোখ বন্ধ করে থাকব?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen