বাতিল গ্লাভস-মাস্ক বাড়াচ্ছে দূষণের চিন্তা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঘরে ঘরে যে মাস্ক-গ্লাভস ব্যবহার করা হচ্ছে, যথাযথ পদ্ধতিতে নষ্ট না করলে তা পরিবেশ দূষণ ঘটাতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা পরিবেশবিদদের। আত্মরক্ষার জন্য যে উপকরণগুলো অত্যাবশ্যকীয়, ভবিষ্যতে তা হয়ে উঠবে বিপদের কারণ। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এই সতর্কবার্তার লক্ষ্য একবার ব্যবহার করেই ফেলে দেওয়া মাস্ক, গ্লাভস। বিশেষ করে পলিভিনাইলের প্রয়োগে তৈরি দীর্ঘমেয়াদি মাস্ক এবং নাইট্রাইল ও ভিনাইল গ্লাভস। ইতিমধ্যেই অনেক দেশের বড় শহরেই মাস্ক ও গ্লাভস-দূষণ দেখা দিতে শুরু করেছে।
সিগারেটের শেষাংশ, ঠান্ডা পানীয়র স্ট্র এবং প্লাস্টিকের প্যাকেট সারা বিশ্বে দূষণের অন্যতম বড় কারণ। এ বার কি সেই ভূমিকা নিতে চলেছে করোনা ঠেকানোর মাস্ক ও গ্লাভস? ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ এবং হংকং ও জাপানে দেখা গিয়েছে সমুদ্র সৈকতে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ফেলে দেওয়া মাস্ক, গ্লাভস। ব্যতিক্রম নয় এ দেশও। রাস্তার ধারে যত্রতত্র পড়ে থাকছে এই সামগ্রী। এ নিয়ে চিন্তায় পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।
পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, সুতির মাস্ক পরিবেশের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ। তবে নানা ধরনের প্লাস্টিকের সকেট দেওয়া যে মাস্কের বিক্রি এখন বেড়েছে, তার অনেকগুলোতেই পলিপ্রোপিলিন থাকে। এই রাসায়নিক যৌগ পরিবেশে মিশতে সময় লাগে।
কী করা উচিত?
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক পৃথা ভট্টাচার্য বলছেন, ‘অতি উচ্চ তাপমাত্রায় এই সামগ্রীগুলো নষ্ট করা উচিত। বাড়িতে ব্যবহারের পর মাস্ক ও গ্লাভস ব্লিচিং পাউডার বা সাবান জলে ধুয়ে আলাদা করে রাখা উচিত।’
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান কৃষ্ণেন্দু আচার্য বলছেন, ‘আতঙ্কে মানুষ এখন বেশি করে মাস্ক-গ্লাভস কিনছেন। আতঙ্কের প্রহর কাটলে যেন যথাযথ ভাবে তা নষ্ট করার কথাও মনে রাখেন।’
পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, মাস্কের পাশাপাশি যে নাইট্রাইল ও ভিনাইল গ্লাভস ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলোও পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব নয়। এই জাতীয় গ্লাভসের মাটিতে মিশতে অন্তত দু’বছর সময় লাগে। তাই তা পুকুর বা ড্রেনে ফেলা উচিত নয়।
কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র এবং স্বাস্থ্যবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতীন ঘোষ ফেলে দেওয়া মাস্ক ও গ্লাভসের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায়। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০টা ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই বর্জ্যের পৃথকীকরণ শুরু করেছি। সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করছি, আপনারা যেখানে সেখানে মাস্ক ও গ্লাভস ফেলবেন না। আলাদা করে রাখুন। আমরা তা সংগ্রহ করে নেব।’