সরকারি ত্রাণে বেঁচে অন্তত ১ কোটি ৩৪ লক্ষ মানুষ
টানা ৪০ দিন। বিশ্বের সর্বকালের সর্ববৃহৎ লকডাউনের পথে এগোচ্ছে ভারত। এর পরিণতি যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তার জ্বলন্ত প্রমাণ সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা কেন্দ্রের রিপোর্ট। যে রিপোর্টে বলা হয়েছে ৩১ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিল, এই দু’সপ্তাহেরও কম সময়ে সরকারি ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
আপাতত দেশজুড়ে প্রায় ১৪ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ সরকারি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়ে আছে। আরও অন্তত ১ কোটি ৩৪ লক্ষ মানুষ জীবনধারণ করছে সরকারের বিলি করা খাদ্যের উপর নির্ভর করে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর দাবীতে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা করেন আইনজীবী অলোক শ্রীবাস্তব। সেই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতে কেন্দ্র জানিয়ে দেয়, পরিযায়ী শ্রমিকদের এখনই ঘরে ফেরানোর প্রয়োজন নেই। লকডাউনে এদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার সব ব্যবস্থা সরকার করছে।
তারপরই পরিযায়ী শ্রমিক ও অন্যান্য গৃহহীনদের জন্য সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলি তুলে ধরেন কেন্দ্রের আইনজীবী। সরকারের পেশ করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১২ এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত দেশের মোট ৩৭ হাজার ৯৭৮টি ত্রাণ শিবিরে মোট ১৪ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ১ কোটি ৩৪ লক্ষ মানুষকে নিয়মিত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। অর্থাৎ এই ১ কোটি ৩৪ লক্ষ মানুষের দিন কাটছে সরকারি ত্রাণের উপর নির্ভর করে।
এর আগে ৩১ মার্চ সরকার একইরকম একটি পরিসংখ্যান পেশ করেছিল। যাতে বলা হয়েছিল, ২১ হাজার ৬৪টি ত্রাণ শিবিরে মোট ৬ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এবং মোট ২২ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষকে নিয়মিত খাবার দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ মাত্র ১২ দিনে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আর সরকারি খাবারের উপর নির্ভরশীলদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। আর এদের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করতেই দুর্বিষহ হয়ে ওঠে পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবন। কাজ খুইয়ে, অস্থায়ী বাসস্থান খুইয়ে দিশেহারা হয়ে উঠেছেন তাঁরা। ওদের কাছে মাথা গোঁজার জন্য বাড়ি নেই, রোজগারের জন্য কাজ নেই, খাবার জন্য অন্ন নেই। তারপর আরও ১৯ দিনের জন্য বেড়েছে লকডাউনের মেয়াদ। আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জীবন। এখন বেঁচে থাকার ভরসা বলতে সরকারি সাহায্য।