উত্তরবঙ্গ নিয়ে বারলার মন্তব্যে অস্বস্তিতে বিজেপি, মুখে লাগাম এর নির্দেশ
মানতে হবে দলীয় অবস্থান। পার্টি লাইনের বাইরে গিয়ে একটি কথাও নয়। কোনও পরিস্থিতিতেই অযথা বিতর্কে জড়ানো চলবে না। দলীয় সূত্রের খবর, বঙ্গের এমপিদের জন্য এমনই কড়া নির্দেশ জারির পথে হাঁটতে চাইছে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আলিপুরদুয়ারের সংসদ সদস্য জন বারলার (john Barla) বাংলা ভাগ নিয়ে মন্তব্যের জেরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যা সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বিজেপিকে। তাই শেষ পর্যন্ত বঙ্গভঙ্গ ইস্যুতে ঢোক গিলতেই বাধ্য হচ্ছে তারা। বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের শীর্ষ সূত্রের দাবি, বিতর্ক এড়াতে সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে বাংলার দলীয় এমপিদের বক্তব্যের উপর কড়া নজর রাখা হবে। এখানেই শেষ নয়, শুধুমাত্র তাঁদের সতর্ক করতে এব্যাপারে জারি করা হতে পারে হুইপও।
বিজেপির অন্দরের খবর, নেতা-মন্ত্রীরা প্রকাশ্যেই যেভাবে উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবিতে সরব হচ্ছেন, তাতে দলের বঙ্গ ব্রিগেড রীতিমতো কোণঠাসা। সংসদের অধিবেশনে এ ব্যাপারে কোনওরকম বিতর্ক চাইছে না কেন্দ্রের শাসক দল। এ প্রসঙ্গে লোকসভায় বঙ্গ বিজেপির হুইপ খগেন মুর্মু বলেন, ‘দল যা অবস্থান নেবে, বিজেপির সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককেই তা মেনে চলতে হবে। দলীয় এমপিরাও এই অনুশাসনের বাইরে নন। তাঁরা পার্টি লাইনের বাইরে গিয়ে কথা বলছেন কি না, তা অবশ্যই দেখতে হবে। এ ব্যাপারে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ আমি পশ্চিমবঙ্গের দলীয় এমপিদের জানিয়ে দেব।’
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। ‘আব কি বার, ২০০ পার’-এর দাবি করা সত্ত্বেও এবারের বিধানসভা ভোটে বাংলায় বিজেপি তিন অঙ্কেও পৌঁছতে পারেনি। ওই ভোটের ফলাফল প্রকাশের দু’মাসের মধ্যেই আগামী ১৯ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। চলবে আগামী ১৩ আগস্ট পর্যন্ত। সদ্যই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বড়সড় রদবদল করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ঠাঁই হয়েছে বঙ্গ বিজেপির চারজন এমপির। গেরুয়া শিবিরের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে বাংলা ভাগের ইস্যুতে প্রতিপক্ষদের কাছে নাস্তানাবুদ হতে পারে তারা। তাই প্রতি-আক্রমণে বঙ্গ বিজেপির এমপিরা যাতে পার্টি লাইনের বাইরে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে না বসেন, তা নিশ্চিত করতে চাইছে দল।
বিজেপির অন্দরের খবর, সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্ব, জিরো আওয়ার কিংবা কোনও বিতর্ক আলোচনায় অংশ নেবেন বঙ্গ ব্রিগেডের এমপিরা। সেখানে তাঁরা যাতে বিতর্কিত কোনও মন্তব্য না করেন, আদতে তার উপরই নজর রাখতে চাইছেন শীর্ষ নেতারা। বাংলা ভাগ ইস্যুতে অবশ্য ইতিমধ্যেই দূরত্ব বজায় রেখেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অবস্থা সামাল দিতে শীর্ষ নেতারা একাধিকবার দাবি করেছেন যে, ব্যক্তিগত কোনও মন্তব্য দলের অবস্থান নয়। এই ডামাডোল পরিস্থিতির মধ্যে যদি বঙ্গ বিজেপির এমপিরা সংসদেও এই ইস্যুতে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে তা সামলানো আরও কঠিন হবে বলেই মনে করছে দলের একটি বড় অংশ।