ভ্যাকসিনের ডবল ডোজে দেশে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল বাংলা
করোনা ভাইরাসকে (Corona Virus) জব্দ করার অন্যতম অস্ত্র টিকা। সেই টিকাকরণের নিরিখে নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাতকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল বাংলা (Bengal)। না, প্রথম ডোজ নয়। এই হিসেব দ্বিতীয় ডোজ (Second Dose) সম্পূর্ণ করার। রবিবার সকাল সাতটা পর্যন্ত পাওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনা টিকাকরণে দেশে শীর্ষস্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। তারা ৭৭ লক্ষ ৪৪ হাজার ১০৭ জনকে টিকার দু’টি ডোজ দিতে পেরেছে। তারপরই আছে বাংলা। পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) ৬৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪৪ জন করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। ৬২ লক্ষ ৬৪ হাজার ১৭৮ জনের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করে তৃতীয় স্থানে গুজরাত। উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থান রয়েছে যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে।
দৈনিক পাঁচ লক্ষ টিকা দেওয়ার ক্ষমতা ও পরিকাঠামো রয়েছে রাজ্যের। কলকাতা পুরসভা ক্ষেত্রে এই সংখ্যা দিনে সর্বোচ্চ এক লক্ষ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারংবার অভিযোগ করেছেন, চাহিদা আর ক্ষমতার তুলনায় কেন্দ্রের দেওয়া টিকা অনেক কম দিচ্ছে। তাতেও যে কাজ হয়নি, পরিসংখ্যানই তার প্রমাণ। টিকাকরণের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘জুলাইয়ের প্রথম ১৫ দিনে ২৫ লক্ষ টিকা পাওয়ার কথা ছিল। এখনও পর্যন্ত ২২ লক্ষ পেয়েছি। পরের ১৫ দিন পাওয়ার কথা ৪৫ লক্ষ। সব মিলিয়ে ৭০ লক্ষ।’
এই পরিস্থিতির মধ্যেও রাজ্য ডবল ডোজ টিকাকরণে দেশে দু’নম্বরে উঠে আসায় স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত স্বাস্থ্যদপ্তরের শীর্ষকর্তারা। স্বাস্থ্যভবনের হেলথ ডিরেক্টরেটের কোভিড টিকাকরণের শীর্ষকর্তা ডাঃ অসীম দাস মালাকার বলেন, ‘দ্বিতীয় ডোজ হল মানুষের অধিকার। সেজন্য দ্বিতীয় ডোজ পাওয়াকে আমরা বেশ কিছুদিন ধরে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আমাদের এক কোটি ৭৭ লক্ষের বেশি মানুষ প্রথম ডোজ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশেরই দ্বিতীয় ডোজ সম্পূর্ণ করেছি আমরা। দেশে সেই পরিসংখ্যান তুলনায় অনেকটা কম—২৫ শতাংশ।’
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে ১৮ ঊর্ধ্ব জনসংখ্যা সাত কোটি। প্রায় ৬৪ লক্ষ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার অর্থ ৯ শতাংশের কিছু বেশি জনসংখ্যা করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারী হয়েছে। সুতরাং অনেকটা পথ যাওয়া এখনও বাকি। এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘চাহিদা অনুযায়ী টিকা পেলে দিনে কমবেশি আড়াই লক্ষ টিকা দিতে পারব। আরও বেশি পেলে আরও বেশি টিকা দেব।’
বাংলা যেমন দেশের মধ্যে ভ্যাকসিন অসাম্য নিয়ে গোড়া থেকে সোচ্চার, ঠিক তেমনই গোটা পৃথিবীতেই গরিব-মাঝারি আয়ের দেশগুলির সঙ্গে ধনী দেশগুলির টিকাকরণে ফারাক জমিন-আসমানের। সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বা সিএসই’র রিপোর্ট বলছে, ইতিমধ্যে উন্নত দেশগুলির প্রায় অর্ধেক মানুষ (৪৮.৩ শতাংশ) টিকা পেয়ে গিয়েছে। সেখানে গরিব আয়ের দেশগুলিতে এই সংখ্যা গড়ে মাত্র ১ শতাংশ!