সর্পাঘাত গ্রস্তকে বাঁচাতে আসছে রাজ্যের নয়া অ্যাপ
এর আগে সাপের কামড় ও বিষের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কী কর্তব্য, তা জানাতে ‘অবিলম্বে’ অ্যাপ চালু করেছিল রাজ্য। ‘গুগল প্লে’তে সেই অ্যাপের রেটিং ৪.৭। এক কদম এগিয়ে এই ভরা বর্ষায় সর্পাঘাতগ্রস্তদের বাঁচাতে রাজ্য চালু করতে চলেছে আরও একটি অ্যাপ। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের পয়েজন ইনফরমেশন সেন্টার ও স্বাস্থ্য দপ্তর যৌথভাবে তৈরি করছে এই অ্যাপটি। কাছাকাছি কোন কোন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে, তা জানিয়ে দেবে ওই রিয়েল টাইম অ্যাপ। এমনকী, কাছাকাছি কোন কোন হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টি স্নেক ভেনমের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে, তাও জানিয়ে দেবে। শুধু তাই নয়, জিপিএস থাকায় ওই অ্যাপই জানাবে, কীভাবে সহজে ওই হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছনো সম্ভব। শনিবার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
সর্পাঘাতের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সারা দেশে সাপের কামড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যান উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, কেরল প্রভৃতি রাজ্যে। আর এই রাজ্যে দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হুগলি, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ জেলায় সবচেয়ে বেশি মানুষ সাপের কামড়ে মারা যান। বেশি মৃত্যু হয় চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপারের কামড়ে। অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ বেশ কয়েকটি জেলায় মৃত্যুর আরেক নাম কালাচ বা কালো চিতি বা ডোমনা চিতি বা শিয়রচাঁদ সাপ। এছাড়াও কেউটে বা কালো সাপ এবং গোখরো বা খরিশ সাপের কামড়েও বহু মানুষের মৃত্যু হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সারা দেশেই সাপের কামড়ে যা মৃত্যু হয়, তার মাত্র ৭.২৩ শতাংশ সরকারিভাবে জানানো হয়। সর্পাঘাতগ্রস্তদের মাত্র ২২.১৯ শতাংশ হাসপাতালে যান। মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা বেশি সাপের কামড় খান।
রাজ্যে ইতিমধ্যেই চালু ‘অবিলম্বে’ অ্যাপে ‘সাপে কামড়ালে কী করবেন আর কী করবেন না’, ‘প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা’, ‘সাপের বাসস্থান ও স্বভাব’, ‘সাপের চিত্রাবলী, ‘শিক্ষামূলক ভিডিও’ ইত্যাদি ভাগ রয়েছে। গোখরো, কেউটে, কালাচ, শাঁখামুটি, চন্দ্রবোড়া, জল কেরাল— এই ছ’টি বিষাক্ত এবং পুঁয়ে, হেলে, জলঢোঁড়া, দাঁড়াশ, ঘরচিতি, উদয়কাল, বেত আছড়া, দুধরাজ, তুতুর, ময়াল, মেটেলি, লাউডগা, কালনাগিনী প্রভৃতি বিষহীন বা ক্ষীণবিষ সাপের সম্পর্কেও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু, বাস্তবে সাপের কবলে পড়লে চটজলদি কাছের কোনও হাসপাতালে কীভাবে যাওয়া সম্ভব ইত্যাদি তথ্য হাজার হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।