চাইলেই তেলের দাম ৮ টাকা কমাতে পারে মোদী সরকার, নেই সদিচ্ছা?
লিটার পিছু অন্তত আট টাকা দাম কমানো সম্ভব। তারপরও পেট্রল-ডিজেলের মতো জ্বালানি বিক্রি করে পর্যাপ্ত অর্থ কোষাগারে ভরতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার। সাধারণ মানুষের পকেট না কেটেও। এই দাবি করেছে ভারতীয় অর্থনীতির উপর গবেষণাকারী একটি নামজাদা সংস্থা।
গবেষণা সংস্থা ‘কোয়ান্ট ইকো’ সাফ জানিয়েছে, এই ছাড় নরেন্দ্র মোদী সরকার দিতে পারে এক্সাইজ ডিউটি থেকেই। তাদের যুক্তি, গত অর্থবর্ষে কেন্দ্রের টার্গেট ছিল, তারা পেট্রল ও ডিজেলের এক্সাইজ বাবদ ৩.৯ লক্ষ কোটি টাকা আদায় করবে। কিন্তু চলতি আর্থিক বছরের জন্য, অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সেই বাজেট কমিয়ে আনে তারা। তা দাঁড়ায় ৩.৪ লক্ষ কোটি টাকায়। ওই গবেষণা সংস্থার হিসেব, চলতি বছরে কেন্দ্র বাজেট এস্টিমেটের থেকে বাস্তবে অনেক বেশি আয় করবে। পেট্রল ও ডিজেল থেকে বছর শেষে তাদের রোজগার দাঁড়াতে পারে ৪.৩ লক্ষ কোটি টাকা।
চলতি আর্থিক বছরের গোড়ায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছিল দেশজুড়ে। তাতে থমকে গিয়েছিল আর্থিক কার্যকলাপ। সংস্থাটির দাবি, প্রথম তিন মাসে দেশে বাণিজ্য বা অন্যান্য কার্যকলাপ ঢিমেতালে চলেছে। কিন্তু দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক, অর্থাৎ জুলাই মাস থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করবে। সেক্ষেত্রে পেট্রল ও ডিজেলের দাম বাড়লেও, তার চাহিদা ও ব্যবহার অব্যাহত থাকবে। সেক্ষেত্রে সরকারের কোষাগার ভরতে বাধ্য। এক্সাইজ ডিউটি বাবদ তাই লিটারে আট টাকা ছাড় দিলে, তা সরকারের আনুমানিক আয়ের উপর প্রভাব ফেলবে না। তাদের হিসেব, আট শতাংশের জায়গায় যদি পাঁচ শতাংশ এক্সাইজ ছাড় দেওয়া হয়, তাহলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হতে পারে ৫৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
সরকারের আর্থিক ক্ষতি না হওয়ার দাবি যে শুধু গবেষণা সংস্থাটিই করেছে, তা নয়। দেশের অন্যতম একটি ফান্ড ম্যানেজমেন্ট সংস্থারও দাবি, সরকার লিটার পিছু সাড়ে আট টাকা পেট্রল ও ডিজেলে ছাড় দিলেও, তাতে সরকারের রাজস্বের ক্ষতি হবে না। কারণ ওই সংস্থার অনুমান, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে চলতি আর্থিক বছর শেষে সরকারের এক্সাইজ আদায় পৌঁছবে ৪.৩৫ লক্ষ কোটি টাকায়।
দেশে ক্রমশ কঠিন পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে জিনিসপত্রের দাম ও মুদ্রাস্ফীতি। গবেষণা সংস্থাটির হিসেব বলছে, সরকার যদি সরাসরি পাঁচ শতাংশ এক্সাইজ ডিউটি ছাড় দেয়, তাহলে জিনিসপত্রের দাম সরাসরি পাঁচ শতাংশ কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। আট শতাংশ ছাড়েও মূল্যবৃদ্ধি অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। তাছাড়া খুচরো পণ্যের সূচক এবং পাইকারি পণ্যের সূচকও আট থেকে ১০ বেসিস পয়েন্ট কমতে পারে বলে মনে করছে তারা। তা যদি কমানো যায়, তাহলে সুদ থেকে শুরু করে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিই অনেক বেশি চাঙ্গা হবে বলে দাবি করেছে তারা।