গোসাবায় চালু হচ্ছে ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স
সুন্দরবনের (Sundarbans) প্রান্তিক এলাকা থেকে নদী পেরিয়ে মুমূর্ষু রোগীকে ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র অথবা কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কম সমস্যায় পড়তে হয় না সাধারণ মানুষকে। এই যন্ত্রণা থেকে তাদের মুক্তি দিতে উদ্যোগী হল সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তর (Sundarban Development Board)। গোসাবার (Gosaba) দ্বীপাঞ্চল এলাকায় এবার একটি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স (Water Ambulance) চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। দপ্তরের মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, এই সব দুর্গম অঞ্চলের মানুষদের সুবিধার্থে একটি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স চালু করার কথা আমরা ভেবেছি। আশা করছি এই মাসের মধ্যেই সবটা চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
গোসাবা ব্লকে ন’টি দ্বীপ রয়েছে। বেশ কিছু প্রান্তিক এলাকাতেও থাকেন অনেকে। কুমিরমারি, লাহিড়ীপুর সহ কয়েকটি এলাকা থেকে ব্লকে কিংবা গদখালি আসতে অনেকটা সময় লেগে যায়। পার করতে হয় একাধিক নদী। এই পরিস্থিতিতে রোগীদের নিয়ে আসতে গেলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের আত্মীয়দের। এমনও দেখা গিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র অথবা বাসন্তী নিয়ে যেতে গেলে আলাদা করে নৌকা ভাড়া করে গদখালি পর্যন্ত যেতে হয়। রাতবিরেতে জরুরি ভিত্তিতে কাউকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে গেলে চিন্তার শেষ থাকে না রোগীর পরিজনদের। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গেই নৌকায় করে এপার-ওপার করতে হয় রোগীদের। যেমন কিছুদিন আগেই প্রসব যন্ত্রণায় কাতর এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে যাত্রীবাহী নৌকায় বসিয়ে গোসাবা থেকে গদখালি আনা হয়। তাঁর স্বামী বলেন, চিকিৎসা পরিষেবা পেতে এরকম হয়রানি পোহাতে হবে, ভাবিনি। একটার পর একটা নদী পেরিয়ে স্ত্রীকে বাসন্তী নিয়ে যাচ্ছি। এ কী সম্ভব!
ঘাটের কর্মীদের কাছ থেকে জানা গেল, রোজই এভাবে কাউকে না কাউকে নৌকায় করে আনা হয়। এখানে রোগীদের আনা নেওয়া করতে একটি বোট অ্যাম্বুলেন্স চালু করা খুবই দরকার। গোসাবার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকরাও এই ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্সের পক্ষে সাওয়াল করেছেন। তাঁদের মতে, এভাবে নৌকায় করে রোগীদের নিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। হটাৎ রাস্তায় কিছু দরকার পড়লে, তা দেওয়া যাবে না। তাই অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করা হলে অনেক সুবিধা হবে। তবে শুধু গোসাবা নয়, পাথরপ্রতিমার বেশ কিছু দ্বীপাঞ্চলেও এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। জি প্লট, এল প্লট সহ বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে রোগীদের আনতে গেলে গোটা নৌকা ভাড়া করতে হয়। তাই সেখানেও ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স চালু করার দাবি উঠেছে। মন্ত্রীর কথায়, আপাতত গোসাবাতেই এই পরিষেবা চালু হবে। পাথরপ্রতিমা নিয়ে আগামী দিনে ভাবনাচিন্তা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, এখন সাগরে একমাত্র এই ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু আছে। তাতে অনেকটাই উপকার হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।