ঢালাও বেসরকারিকরণ – বাদল অধিবেশনে বিতর্কিত ১৭টি বিল আনছে কেন্দ্র
বিতর্কিত বিদ্যুৎ আইন, ব্যাঙ্কিং ডিপোজিট ইনসিওরেন্স এবং কয়লাখনিকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার কোল বেয়ারিং এরিয়া সংশোধনী সহ ১৭টি নতুন বিল আসন্ন বাদল অধিবেশনে পাশ করাতে মরিয়া মোদী সরকার। মোট ২৩টি বিল পেশ করা হবে। তার মধ্যে ১৭টি নতুন। বাকিগুলি আগেও পেশ করা হয়েছে, পাশ হয়নি। বস্তুত ১৯ জুলাই থেকে হতে চলা বাদল অধিবেশন সামগ্রিকভাবে ঝোড়ো হতে চলেছে। কারণ, একঝাঁক বিল বিরোধীরা সমর্থন করে না। সরাসরি আপত্তি জানিয়েছে একাধিক রাজ্য সরকারও। বিদ্যুৎ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই বিদ্যুৎ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে সবথেকে বড় অভিযোগ, ঢালাও বেসরকারিকরণ এবং রাজ্যের অধিকারে কেন্দ্র পরোক্ষে হস্তক্ষেপের রাস্তা খুলে দিতে চাইছে।
অন্যদিকে, ব্যাঙ্কে যত টাকাই জমা থাকুক কোনও ব্যাঙ্ক আর্থিকভাবে দেউলিয়া হলে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আইন ‘ডিপোজিট ইনসিওরেন্স বিল’ আসতে চলেছে। বাজেটই এই ঘোষণা করা হয়েছিল যে, ১ লক্ষ টাকা থেকে এই বিমার অঙ্ক বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৫ লক্ষ টাকা। কোল বিয়ারিং এরিয়াস (অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন) সংশোধনী বিল ২০২১ পেশ করা হবে। এই বিলের প্রতিপাদ্য হল, এই সিবিএ আইন অনুযায়ী কয়লাখনির জমি ও কয়ালা খনি যে কোনও বেসরকারি সংস্থাকে লিজ দেওয়া যাবে। এভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার আওতায় থাকা কয়লা খনি ও সরকারি জমিকে বেসরকারি হাতে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে বিরোধীরা এই বিলের চরম বিরোধিতা করেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থা রুগ্ণ হলে সেগুলিকে পুনরুজ্জীবন অথবা বন্ধ করার প্যাকেজ দ্রুত করার লক্ষ্যে একটি ‘ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্করাপ্টসি কোড’ বিলও আনা হবে। এই সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স আগেই হয়েছে। এবার অর্ডিন্যান্সকে সরিয়ে আনা হবে আইন।
এদিকে একদিকে যখন এই ১৭টি বিল পাশ করার জন্য সরকার মরিয়া, তখন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন দেশজুড়ে চালু করার তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে কি না সেই জল্পনাও তুঙ্গে উঠেছে। বিজেপি এমপি রবি কিষাণ লোকসভায় এবং রাকেশ সিনহা রাজ্যসভায় পেশ করবেন একটি করে প্রাইভেট মেম্বার বিল। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল। পাশাপাশি রাজস্থানের এক এমপি পেশ করবেন অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রাইভেট মেম্বার বিল। প্রাইভেট মেম্বার বিল সরকার পেশ করে না। যে কোনও এমপি এই বিল পেশ করেন। কিন্তু সাধারণত এই বিল সরকারিভাবে পাশ হয় না।
তাহলে কেন এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ? কারণ, যে কোনও বিল সংসদে পেশ করা হলে সেটি নিয়ে সংসদে (Parliament) আলোচনা হয়। ইস্যুতে পরিণত হয়ে যায়। সেই কারণেই চর্চা শুরু হয়েছে যে, তাহলে কি সরকারি স্তরেও এই বিল নিয়ে উদ্যোগ শুরু হয়েছে? এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে।