চা বাগানে বারলার বাড়ি নিয়ে তদন্তের দাবি খোদ বিজেপির অন্দরেই
কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী জন বারলার (John Barla) চামুর্চি মোড়ে চারতলা বিল্ডিং নির্মাণ ও লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানে তিনতলা বাড়ি নিয়ে এবার তদন্তের দাবি উঠল বিজেপির অন্দরেই। বিজেপির (BJP) আদি শিবিরের নেতারা মনে করছেন, মানুষের কাছে দলের স্বচ্ছতা তুলে ধরতে প্রকৃত বিষয়টি জনসমক্ষে নিয়ে আসা উচিত। তাই ওই দু’টি বিষয়ে দলের খোঁজখবর নেওয়া দরকার। দল কথা বলুক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে।
মোদীর মন্ত্রিসভার সংখ্যালঘু বিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী জন বারলার বাড়ি জলপাইগুড়ির লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানে। তিনি ওই চা বাগানেরই শ্রমিক ছিলেন। অভিযোগ, সেখানে সরকারি লিজের জমিতে বিলাসবহুল তিনতলা বাড়ি তৈরি করেছেন আলিুরদুয়ারের এমপি। এনিয়ে প্রথম প্রশ্ন তুলেছিলেন সদ্য তৃণমূলে (TMC) যোগ দেওয়া বিজেপির আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। ওই বাড়ি তৈরির টাকার উৎস নিয়েও গঙ্গাবাবু প্রশ্ন তোলেন।
এরপরই চামুর্চিতে মন্ত্রীর চারতলা বিল্ডিং নির্মাণের বিষয়টি জনসমক্ষে নিয়ে আসেন তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি কিষান কল্যাণী। অভিযোগ, সরকারি জমিতে ওই বিল্ডিং নির্মাণ হচ্ছে। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি জেলাশাসকের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগও জানিয়েছিলেন। তৃণমূলের অভিযোগ পেয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরকে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু তদন্তের নির্দেশ দেন। ভূমিদপ্তর তদন্ত করে জানিয়ে দেয়, জমিটি পূর্তদপ্তরের। এরপরই জেলাশাসক ওই নির্মাণের বিরুদ্ধে পূর্তদপ্তরকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে যতবারই বারলাকে টেলিফোন করা হয়, প্রতিবারই তিনি ফোন কেটে দেন। ফলে মন্ত্রীর বক্তব্য মেলেনি।
যদিও বিজেপির জলপাইগুড়ি (JALPAIGURI) ও আলিপুরদুয়ার জেলা নেতৃত্ব তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, জন বারলা মন্ত্রী হয়েছেন বলেই তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল রাজনৈতিক চক্রান্ত শুরু করেছে। কিন্তু, তৃণমূলের পাশপাশি সাধারণ মানুষও এ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এবার বিজেপির অন্দরেও তদন্তের দাবি উঠল। বিজেপির আদি শিবিরের নেতাদের দাবি, স্বচ্ছতার লক্ষ্যে দল বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলুক।
বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য হেমন্ত রায় বলেন, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি ও চামুর্চি মোড়ের নির্মাণ নিয়ে আঙুল ওঠায় সাধারণ মানুষ তো প্রশ্ন তুলবেই। এতবড় নির্মাণ করার জন্য কোথা থেকে টাকা এল, সেটা সকলেই জানতে চায়। বিষয়টি জানা গেলে ধোঁয়াশা কাটবে। দলের পক্ষেও জনসমর্থন মিলবে। বিজেপির জাতীয় পরিষদের সদস্য দলের আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন জেলা সভাপতি গুণধর দাস বলেন, লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানের বাড়ি ও চার্মুচিতে বহুতল নির্মাণ আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন কি না তা নিয়ে দল মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলুক। এতে দোষের তো কিছু নেই।
বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা আহ্বায়ক ভূষণ মোদক অবশ্য বলেন, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি ও বহুতল নির্মাণ নিয়ে দলের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। আসলে জন বারলা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন বলেই তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল রাজনৈতিক চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে নেমেছে।