প্রেসক্রিপশনের ওষুধ অমিল, উদ্বিগ্ন সুগার, প্রেসারের রোগী
দমদমের বাসিন্দা অজয় ঘোষ। বয়স ৫৭। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকটাই বেশি। তাই চিকিৎসকের পরামর্শমতো সারা বছর ওষুধ খেতে হয়। তবে লকডাউন শুরুর পর থেকে আশপাশের ওষুধের দোকানে তাঁর নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের ওষুধ পাচ্ছেন না। অগত্যা অনলাইনে ওষুধ অর্ডার দিতে যান। সেখানেও সমস্যা। ওই নির্দিষ্ট ওষুধটি অনলাইনেও পাননি। বদলে একই কম্পোজিশনের (জেনেরিক নাম) অন্য কোম্পানির ওষুধের সম্বন্ধে জেনে নিরুপায় হয়ে সেই ওষুধটিই কেনেন।
মুকুন্দপুরের বাসিন্দা সাধন মিত্র। ১৫ বছর ধরে হাই সুগারের রোগী। তাঁরও এক সমস্যা। ডাক্তারবাবু প্রেসক্রিপশনের সুনির্দিষ্ট ওষুধটি পাড়ার দোকানে পাচ্ছেন না। চেনা দোকানদার এদিক-সেদিক খোঁজ নিয়ে জানিয়েছেন, পাইকারি দোকানেও নেই। তবে বিকল্প আছে। সেটা কি তেমন কাজ দেবে, এই ভেবে দুশ্চিন্তা রয়েছে, আবার ওষুধও যে চাই। অজয়বাবু, সাধনবাবুদের মতো হাজার হাজার মানুষ লকডাউনের মধ্যে দ্বিতীয় পথ না পেয়ে একই কম্পোজিশনের অন্য ব্র্যান্ডের ওষুধ কিনছেন। অনলাইনে না হলে ওষুধের দোকানে বলে একই কম্পোজিশনের ওষুধ কেনা চলছে।
বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, একই কম্পোজিশনের দু’টি ব্র্যান্ডের ওষুধের মধ্যে মূল কার্যকারিতায় তফাত হওয়ার কথা নয়। তাই প্রেসক্রিপশনে লিখে দেওয়া ব্র্যান্ডের ওষুধ না পাওয়া গেলে অন্য ব্র্যান্ডের ওষুধ কেনা যেতেই পারে। তবে দোকান হোক বা অনলাইনে, অন্য ব্র্যান্ডের ওষুধ কেনার আগে অবশ্যই টেলিফোনে আপনার চিকিৎসকের কাছে সেই ওষুধ সম্বন্ধে জেনে নেওয়া উচিত।
রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের নোডাল অফিসার সুকুমার দাস বলেন, অধিকাংশ বড় ব্র্যান্ডের ওষুধ বাজারে মিলছে। তাও যদি কোনও সুনির্দিষ্ট ওষুধ না মেলে, আমাদের অনুরোধ চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে একই জেনেরিক নামের অন্য বিকল্প কিনুন।
রাজ্যের ওষুধের দোকানদারদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিসিডিএ)-এর রাজ্য সম্পাদক সজল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আমরা ৪০ হাজারের বেশি দোকানে এই বার্তাই দিচ্ছি। উদ্বিগ্ন না-হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিকল্প ওষুধ কিনুন। ওষুধ অমিল সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ থাকলে আমার মোবাইল নম্বর ৯৪৩৪০০৪১৭১-এও ফোন করতে পারেন, সাধ্যমতো চেষ্টা করব জোগাড় করার।