দৈনিক ৩,২০০ কোটি টাকা ক্ষতি দেশের পরিবহণ ক্ষেত্রে
করোনা সংক্রমণ রোধে গোটা দেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এর জেরে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে দৈনিক ৩,২০০ কোটি টাকা ক্ষতির মুখ দেখছে দেশের পরিবহণ শিল্প। দেশে মোট ১.২৫ কোটি হাল্কা ও ভারি বাণিজ্যিক গাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১২.৫ লক্ষের উপর গাড়ির ভারতের যে কোনও প্রান্তে পণ্য নিয়ে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। অর্থাৎ, ন্যাশনাল পারমিট রয়েছে এই গাড়িগুলির। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশের বেশি বা প্রায় ১০ লক্ষ বাণিজ্যিক গাড়ি ছোট ব্যবসায়ী বা যাঁদের ১-৫টি ট্রাক রয়েছে। এর মধ্যে আবার ২০ শতাংশের মালিকই ড্রাইভার।
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহণে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি। এর ফলে থমকে পড়ে থাকা ট্রাকের সংখ্যা ৯০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। আর ন্যাশনাল পারমিট পাওয়া ট্রাকের মাত্র ২ লক্ষ রাস্তায় রয়েছে।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা আতঙ্ক। যে কারণে, ড্রাইভারদের একটা বড় অংশ বের হতে চাইছে না। ফলে যাঁরা নিজেরাই নিজেদের ট্রাক চালান রোজগারের আশায় তাঁরাই শুধুমাত্র গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছে। এর ফলে বিপুল সঙ্কটে পড়েছে এই ক্ষেত্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত প্রায় ২০ কোটি মানুষ।
এর সব থেকে বিরূপ প্রভাব পড়বে দেশের ছোট ট্রাক মালিকদের উপর। কারখানাগুলিতে উৎপাদন শুরু হতে কমপক্ষে আরও ছ’মাস সময় লাগবে। ক্রেতা চাহিদা তৈরি হতেও একই সময় অপেক্ষা করতে হবে। তারপর পণ্য পরিবহণ একটা মোটামুটি জায়গায় আসবে। যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এরপর নগদের জোগান কমবে।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সংগঠনের তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গড়করি এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে একটি শ্বেতপত্র পাঠানো হয়েছে। ওই শ্বেতপত্রে পারমিট ফি, ইএমআই, ফিটনেস, থার্ড পার্টি ইনসিওরেন্স, মোটর ভেহিকল ট্যাক্স/প্যাসেঞ্জার ট্যাক্স/গুডস/টোকেন ট্যাক্স প্রভৃতি দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে।
গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্য টাকা না পাওয়ার কারণে নগদের জোগান নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা দূর করতে মূলধনের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই শ্বেতপত্রে। এছাড়াও একগুচ্ছ দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপোর্ট সংস্থাগুলি।