ধোঁয়াশা বাড়ছে নিশীথ প্রামাণিকের নাগরিকত্ব নিয়ে, জল্পনা মন্ত্রীর নীরবতায়
নিশীথ প্রামাণিক (Nisith Pramanik) নাগরিকত্ব (Citizenship) ও জন্মস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে এই বিষয়ে নিজে চুপ কোচবিহারের (Cooch Behar) সাংসদ নিজে। আর এই নীরবতার জেরে ক্রমেই ধোঁয়াশা বাড়ছে নিশীথ প্রামাণিকের নাগরিকত্ব নিয়ে। যদিও নিশীথের নীরবতা নিয়ে বিজেপির একাংশের দাবি, নিশীথ স্বরাষ্ট্র ও ক্রীড়ার মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। তাই তিনি কাজে ব্যস্ত। তবে তাতে কৌতূহল মিটছে না অনেকেরই। তবে এই বিষয়ে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘নিশীথ প্রামাণিকের বাবার পূর্বপুরুষ অবিভক্ত কামতাপুরের হরিনাথপুর গ্রামে থাকতেন। তবে নিশীথ বাংলাদেশি, এই অভিযোগ মিথ্যে।’
উল্লেখ্য, রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ ও অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি রিপুন বোরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে দাবি করেন, নিশীথ প্রামাণিক নাকি বাংলাদেশের নাগরিক। চিঠিতে এই বিষয়ে তদন্ত করার ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। অসমের সাংসদ দাবি করেন, বাংলাদেশের গাইবাঁধা জেলার পলাশবাড়ি থানার হরিনাথপুরে জন্ম নিশীথ প্রামাণিকের।
রিপুন বোরা আরও লেখেন, নিশীথ কম্পিউটার কোর্স করার জন্য পশ্চিমবঙ্গে আসেন। কম্পিউটারের ডিগ্রি পাওয়ার পর প্রথমে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। পরে বিজেপিতে। তাঁর আরও দাবি, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখানো হচ্ছে যে, নিশীথ নির্বাচনের নথিপত্রে কোনও কারসাজি করে নিজেকে কোচবিহারের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ সেই নথি ভুয়ো। আর এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে এটা দেশের ক্ষেত্রে খুব গুরুগম্ভীর বিষয় যে, একজন বিদেশি নাগরিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তারপরই এই বিষয়ে একে একে বিজেপিকে তোপ দাগেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষরা। তবে চুপ রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজে।
প্রসঙ্গত, দিনহাটা মহকুমার খারিজা বালাডাঙা গ্রামে বাস করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের। দিনহাটার স্কুলে পড়াশোনা করেছেন এবং দিনহাটার এক প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতাও করেন। ২০১৩ সালে তৃণমূল যুবতে যোগ দেন তিনি। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভেটাগুড়ি-১-এর বালাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালে তাঁর নেতৃত্বে তৃণমূল যুব দিনহাটা-১ ব্লকের একাধিক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বহু আসনে জেতে। ওই বছরই ডিসেম্বর মাসে দল বিরোধী কাজের জন্য নিশীথ প্রামাণিককে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ নির্বাচিত হন। পরে কেন্দ্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সপথ নেন। আর তারপই শুরু হয় বিতর্ক।