মোদী সরকারের ভ্রান্ত কোভিড নীতির জন্যই প্রাণ হারিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকরা, রাজ্যসভায় আক্রমণ শান্তনুর
পেট্রোল ডিজেল, রান্নার গ্যাস নিয়ে একের পর এক অভিযোগ। তার ওপর পেগাসাস স্পাইওয়্যার, যা নিয়ে রাজ্যসভায় বারে বারে মুলতুবি হয়ে গেছে বাদল অধিবেশন। সোমবার ১৯ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে এই বাদল অধিবেশন। চলবে ১৩ অগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু মঙ্গলবার পেগাসাস সহ একাধিক বিষয় নিয়ে রাজ্যসভায় বিরোধী পক্ষ হৈ-হট্টগোল করলে প্রথমে ১২ টা পরে আবার সেই সময়সীমা বাড়িয়ে বেলা ১টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। এরপর অধিবেশন শুরু হলে তৃণমূলের তরফে বক্তব্য রাখেন রাজ্যসভার সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন (Santunu Sen)।
বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, ‘আগামী ১৩ অগস্ট পর্যন্ত, অর্থাৎ যতদিন বাদল অধিবেশন চলবে ততদিন পর্যন্ত প্রতিদিন সারা বিশ্বব্যাপী পেগাসাস হ্যাকিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জারি রাখবে তৃণমূল।’ এরপর দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়েও বক্তব্য রাখেন শান্তনু সেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি নিশানা করে তিনি বলেন, ‘নমস্তে ট্রাম্প’ থেকে শুরু করেছিলেন মোদী। ফেব্রুয়ারির ২৪ ও ২৫ তারিখ আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে মোদী নমস্তে ট্রাম্প-এর আয়োজন করেন। অথচ তার আগে ২৭ জানুয়ারি কেরলে প্রথম করোনা ধরা পড়ে। এরপর করোনার প্রকোপ বাড়লে, মার্চ মাস থেকে দেশব্যাপী শুরু হয় লকডাউন। যার ফলে সমস্যায় পড়েন ভিনরাজ্যে কর্মরত শ্রমিকরা। কিন্তু তাঁদের নিজেদের রাজ্যে ফেরানোর জন্য কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। শান্তনু সেন বলেন,’অনেক পরিযায়ী শ্রমিককে পশ্চিমবঙ্গে ফেরার জন্য তাঁদের ট্রেন ভাড়াও দেওয়া হয়নি। পরবর্তীকালে এই সব পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকেও করোনা ছড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। করোনার পরীক্ষা শুরু হলে কেন্দ্রীয় সরকার যে সকল টেস্টিং কিট কিনেছিল, সেগুলি বেশিরভাগ চীন থেকে আনা হয়েছিল এবং প্রায় ১৪৫% লাভ রেখে এই জিনিসগুলি কেনা হয়েছিল।’ এরপর বিধানসভা ভোট নিয়েও কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গে মোট ৮ দফায় ২৯৪টি আসনে ভোট হয়। কিন্তু তামিলনাড়ুতে মাত্র ১টি দফায় ২৩৪টি আসনে বিধানসভা ভোট হয়। নির্বাচনের আগে বাংলায় আক্রান্তের হার ছিল ২.৩%। কিন্তু প্রায় আড়াই মাসব্যাপী ৮ দফায় নির্বাচনের পর পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের হার ৩৩% বেড়ে যায়। তবে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের হার ১.৮%। যার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান তিনি।
মোদী সরকারের ভ্রান্ত কোভিড নীতির জন্যই প্রাণ হারিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকরা, রাজ্যসভায় আক্রমণ শান্তনুর
অক্সিজেন কন্সেন্ট্রেটর নিয়েও এদিন বক্তব্য রাখেন তিনি। করোনার প্রথম প্রবাহের পর করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ আসে ভারতে। যার জন্য তৈরি ছিল না কেন্দ্রীয় সরকার। এই দ্বিতীয় প্রবাহে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। যে কারণে পশ্চিমবঙ্গে অক্সিজেন কন্সেন্ট্রেটর বানানোর জন্য জমি চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মোদী সরকার তাঁকে সেই জমি দেয়নি। তার বদলে উত্তর প্রদেশে অক্সিজেন কন্সেন্ট্রেটর বানানোর জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। অথচ কিছু দিন আগে পর্যন্ত সেই রাজ্যের নদীতে করোনা রোগীদের মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায় বলে জানান শান্তনু সেন।