শহিদ তর্পণ নিয়েও বিভেদ বিজেপিতে, হেস্টিংস অফিস ভরানো নিয়ে চিন্তায় নেতারা
আর কিছুক্ষণ পরই শুরু হয়ে যাবে তৃণমূল কংগ্রেসের হাইভোল্টেজের শহিদ স্মরণ সমাবেশ। এটার দেখাদেখি এবার প্রথম শুরু হচ্ছে বিজেপির শহিদ তর্পণ (Shahid Tarpon) পালন। আর তা নিয়ে দলের অন্দরে আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ল গেরুয়া শিবির। কারণ বিজেপির এই প্রধান কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। হেস্টিংস অফিসে তা হবে বেলা দেড়টায়। উপস্থিত থাকবেন রাজ্য বিজেপির (BJP) নেতারা। আর এই কর্মসূচি নিয়েই মূরুলিধর সেন লেনের অন্দরে ফাটল দেখা দিয়েছে। একাংশ নেতা–কর্মী বলতে শুরু করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের দেখাদেখি শুরু হলো বিজেপির মূল কর্মসূচি। আবার কেউ বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস থেকে আসা নেতার হাত ধরেই মূল কর্মসূচি করতে হবে? বিজেপির নেতা কি কম পড়েছিল?
এই আড়াআড়িভাবে বিভক্তের জেরেই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। যার জেরে হেস্টিংস অফিস ভরাতে সবাইকে উপস্থিত থাকার ফরমান হয়েছে। তবে বিজেপির আর একটা অংশের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসের জমানায় এখনও পর্যন্ত ১৮০ জনের বেশি বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এই দিবস পালন করা হচ্ছে। ঠিক ছিল, দিলীপ ঘোষ রাজঘাটে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন। কিন্তু দলের অন্দরে এই ফাটল চওড়া হতেই তড়িঘড়ি দিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি দিলীপ ঘোষকে দিয়ে হেস্টিংসের শহিদ তর্পণে ভাষণ দেওয়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তৃণমূলী বাধ্যবাধকতা থেকে কী এখনও মুক্ত হতে পারছে না কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব?
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এর বিজেপি নেতা বলেন, ‘রাজ্যে দলের রাশ নিজের হাতে রাখতে পারছেন না দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। এখন দিলীপকে ছাপিয়ে যাচ্ছে শুভেন্দু। তাই নিয়ে দলের অন্দরে মতপার্থক্য তৈরি হচ্ছে।’ পাল্টা দিলীপ শিবিরের দাবি, দিলীপ ঘোষের অনুপস্থিতির সুযোগে রাজ্য বিজেপিকে কেউ কেউ ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করতে পারে, আমরা তা হতে দেবো না। সুতরাং এটা স্পষ্ট যে, আড়াআড়িভাবে ভাগ হয়ে গিয়েছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
এই পরিস্থিতিতে ফের প্রশ্ন উঠছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে বিজেপির মুখ কে? এই প্রশ্নের উত্তর একুশের নির্বাচনের সময় থেকে দিতে পারেনি বিজেপি৷ এখনও তা স্পষ্ট করতে পারছেন না বিজেপি নেতারা। আবার কলকাতার হেস্টিংস অফিসে শহিদ তর্পণ কর্মসূচি শুভেন্দুর নেতৃত্বে হলে, দিলীপ ঘোষ তো রাজ্য বিজেপি থেকে ভ্যানিশ হয়ে যাবেন। তাই সশরীরে শুভেন্দু থাকলেও, ভার্চুয়ালি জবাব দেবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। আর এই দেখে হাসছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।