১১ দিন ধরে রাজ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল, চলতি সপ্তাহেই জমা পড়বে রিপোর্ট
রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি দেখতে গত ১১ দিন ধরে শিলিগুড়িতে রয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। ইতিমধ্যেই এই দলের তরফ থেকে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং,কালিম্পং-সহ একাধিক জায়গা পরিদর্শন সেরে ফেলেছেন। মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, কোভিড হাসপাতাল ও বিভিন্ন কোয়ারেনটাইন সেন্টার অবধি তাঁরা পরিদর্শন করেছেন। আপাতত এই সমস্ত পরিদর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে যা যা তাঁদের নজরে এসেছে তার প্রেক্ষিতে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের শেষে সেই রিপোর্ট জমা পড়তে চলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরে।
সূত্রের খবর, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে যে বিষয়গুলি তা হল। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি-সহ বেশিরভাগ অংশেই লকডাউন বিশেষভাবে কঠোর নেই। কোথাও অনেকটাই শিথিল হয়ে গিয়েছে। একাধিক জায়গায় মনিটরিং বা নজরদারি নেই বললেই চলে। বিশেষ করে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শহরের অংশে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের এক সদস্য জানিয়েছেন, “আমাদের টিম দিনের বেশিরভাগ সময় ঘুরে দেখেছে, রাস্তায় লোকের আনাগোনা আটকানো যায়নি। বিশেষ করে স্কুটার, বাইক ও টোটো যত্রতত্র চলছে। এমনকি অনেক বাইকে দু’জনের বেশি লোককেও চলাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। ফলে সামাজিক দুরত্ব মানা হচ্ছে কই।”
প্রশ্ন তুলছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। রিপোর্টে উল্লেখ থাকছে, পুলিশের উচিত আরও বেশি মনিটরিং করা বা নজরদারি বাড়ানো। তারা মনে করছেন রাস্তায় অপ্রয়োজনীয় কারণে বেরনো গাড়ি ধরে ফাইন করা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তাঁদের নজরে এসেছে, রাস্তায় লোক ঘুরছে মাস্ক ছাড়া। সেগুলি দেখা হচ্ছে না। বাজার বা দোকানে সামাজিক দুরত্ব মানা হচ্ছে না। এর ফলে তাঁদের মনে হয়েছে তাতে কমিউনিটি অ্যাওয়ারনেস অনেক কম। এমনকি কনটেইনমেন্ট জোনে যথাযথ ভাবে নজরদারি নেই। সেখানেও লোকে যত্রতত্র ভাবে ঘুরে বেড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল সূত্রে খবর, সমতলের তুলনায় কিছুটা ভালো দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের অবস্থা। তবে সেখানেও নজরদারি আরও বাড়ানো উচিত। নতুন করে কেউ আক্রান্ত নয় বলে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দেখানোর জায়গা এখনও আসেনি।
উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের ওপর চাপ অনেক বেশি৷ এই করোনার সময়েও ৫ জেলার মানুষ এই মেডিক্যাল কলেজের ওপর নির্ভর করছে। যে বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা চলছে তার পরিকাঠামো যথেষ্ট ভাল বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।তবে টেস্টের সেন্টার উত্তরবঙ্গ আরও বাড়ানো উচিত বলে মত তাঁদের। তবে এই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল প্রশংসা করেছে চা বাগান গুলির। রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, সেখানের শ্রমিকেরা অন্তত ভীষণ রকম সচেতন এই করোনা নিয়ে। তাঁরা সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে কাজ করছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা মাস্ক ব্যবহার করছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের ফিল্ড ভিজিট আপাতত শেষ। প্রতিনিধি দল সূত্রে খবর, তারা শীঘ্রই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দেব। চলতি সপ্তাহের শেষে এই রিপোর্ট জমা পড়তে চলেছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল সূত্রে খবর, “আমাদের পাঠানো হয়েছিল বাস্তবিক পরিস্থিতি দেখতে। আমরা তা দেখেই কাজ করেছি। রিপোর্ট তৈরি করেছি।” তবে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল সূত্রে খবর, তাঁরা মনে করছেন পুলিশের মনিটরিং আরও বেশি করা উচিত।