ভোটে অনুব্রতকে ‘তারকা প্রচারক’ হিসেবে চান ত্রিপুরার নেতারা
আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসছেন ত্রিপুরা (Tripura) তৃণমূলের নেতারা। সেই সফরে তাঁদের সঙ্গে দেখা হতে পারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে দলের ওই দুই শীর্ষনেতার সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি তাঁরা দেখা করতে চান বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) সঙ্গেও। যিনি রাজনৈতিক মহলে ‘কেষ্ট’ নামেই সমধিক প্রসিদ্ধ। কারণ, অনুব্রতের গরমাগরম বক্তৃতায় মজেছেন ত্রিপুরা তৃণমূলের নেতারা। ত্রিপুরার ভোটে কেষ্টকে ‘তারকা প্রচারক’ হিসেবে ব্যবহার করতে চান তাঁরা।
ওই নেতাদের বক্তব্য, মমতা-অভিষেক ছাড়া ত্রিপুরায় যে তৃণমূল নেতারা ইতিমধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম অনুব্রত। তাই পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে তাঁর সঙ্গেও একবার দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন ত্রিপুরা তৃণমূলের ওই নেতারা। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে আপাতত বিজেপি-শাসিত ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়ে বিপুল সাফল্যের পর এ বার ত্রিপুরায় সরাসরি বিজেপি-র মোকাবিলায় নামতে চান মমতা। সেই লক্ষ্যে তৃণমূল কাজও শুরু করে দিয়েছে। সে কারণেই ত্রিপুরার নেতাদের ডাকা হচ্ছে কলকাতায়।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ‘দাপুটে’ রাজনীতিক বলেই পরিচিত বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত। নিজের গরমাগরম বক্তৃতার জন্য বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন। কখনও বিরোধীদের উদ্দেশ্য তাঁর হুঙ্কার সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছে। কখনও আবার তাঁর নিজস্ব স্লোগান ছড়িয়ে পড়েছে তৃণমূলের সর্ব স্তরের কর্মীদের মুখে মুখে। কখনো ‘চড়াম চড়াম’ করে ঢাক বাজানোর কথা বলেছেন তিনি। কখনও ভোটে ‘গুড়বাতাসা’ দেওয়ার নিদান দিয়েছেন। যা বাংলা তো বটেই, বাংলার পাশের রাজ্য ত্রিপুরাতেও জনপ্রিয় হয়েছে। ত্রিপুরার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘বাংলার রাজনীতিতে অনুব্রতবাবু নিজের বিভিন্ন মন্তব্যের জন্য জনপ্রিয়। আমাদের ত্রিপুরার রাজনীতিতেও তাঁর মন্তব্য সমাদৃত। তাই আমরা কলকাতায় যখন দিদি ও অভিষেকের সঙ্গে দেখা করতে যাব, তখন অনুব্রতবাবুর সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টা করব।’’
ত্রিপুরায় ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সব ক’টি আসনেই প্রার্থী দেওয়া নিয়ে আলোচনা করছে। সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে প্রস্তুতি স্বরূপ জোর প্রচার শুরু হবে সেখানে। সেই ভোটের প্রচারে বীরভূমের কেষ্টকে ‘তারকা প্রচারক’ হিসাবে ব্যবহার করতে চান ত্রিপুরার তৃণমূল নেতারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, অনুব্রত ছাড়াও ত্রিপুরায় ‘গ্রহণযোগ্য মুখ’ হলেন পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা, বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং রাজ্যসভার উপ-দলনেতা শুখেন্দুশেখর রায়। অনুব্রতের পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গেও দেখা করতে চান ত্রিপুরার তৃণমূল নেতারা। অগস্টের প্রথম সপ্তাহে ত্রিপুরা তৃণমূলের ১৮ জন নেতার কলকাতায় আসার কথা। মূল সংগঠনের দুই কার্যনির্বাহী সভাপতি ছাড়াও আসার কথা ছাত্র, যুব, মহিলা তফশিলি জাতি-উপজাতি সংগঠনের প্রধানরাও। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেককে তাঁরা ত্রিপুরার সংস্কৃতির স্মারক তুলে দেবেন বলে জানিয়েছেন ত্রিপুরা তৃণমূলের সভাপতি আশিস লাল সিংহ।