রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর ঘিরে উৎকণ্ঠায় বঙ্গ বিজেপি

July 26, 2021 | 2 min read

 তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দিল্লি সফর ঘিরে উৎকণ্ঠায় ভুগছে বঙ্গ বিজেপি’র (Bengal BJP) নেতৃত্ব। চলতি সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি যাওয়ার কথা। সংসদ চলাকালীন সেখানে মোদি-মমতার (Modi -Mamata) প্রস্তাবিত বৈঠক ঘিরে রীতিমতো টেনশনে রয়েছেন এ রাজ্যের বিজেপি নেতারা। কারণ, কৃষি আইন, পেগাসাস, করোনা সহ একাধিক ইস্যুতে সংসদের উভয়কক্ষে এই মুহূর্তে চাপে রয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’কে সপ্তমে নিয়ে যেতে জাতীয় কংগ্রেসের তরফে মমতার দলকে সরাসরি ‘ফিলার’ দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় রাজনীতির এহেন আবহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ওয়াকিবহাল মহলের আগ্রহ বাড়িয়েছে।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে বাম-কংগ্রেস এই ধরনের বৈঠককে ঘিরে মোদি-মমতা গোটআপের তত্ত্ব খাড়া করত, সেই জোটের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে রাজনীতির উলটপুরাণে সবচেয়ে ভালো জায়গায় রয়েছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস।


রাজ্যের বিজেপি নেতাদের একাংশের আশঙ্কা, দিল্লিতে মমতার প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরম মনোভাব দেখালে বঙ্গ রাজনীতিতে গেরুয়া পার্টির সঙ্কট আরও বাড়বে। এ প্রসঙ্গে দলের রাজ্য কমিটির এক নেতা বলেন, ভোট পরবর্তী সময়ে তৃণমূলের রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে আমরা বারবার সরব হয়েছি। কিন্তু এখনও নিচুতলায় কর্মী-সমর্থকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও আদালত গালভরা কিছু নির্দেশ কিংবা সুপারিশ করলেও তাতে কাজের কাজ হচ্ছে না। বাস্তব হল, ভোটের পর বিজেপি’র সংগঠন আগের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, কর্মী-সমর্থকদের ধরে রাখাই এখন আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ, অকপট স্বীকারোক্তি ওই বিজেপি নেতার। তিনি বলেন, বিধানসভা ভোটের আগে সূর্যকান্ত মিশ্র-অধীর চৌধুরীরা বিজেপি-তৃণমূলের আঁতাতের অভিযোগ তুলেছিলেন। এখন দেখছি, কংগ্রেস উল্টে তৃণমূলকে পাশে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। স্বভাবতই রাজ্য তথা জাতীয় পর্যায়ে জোড়াফুল শিবিরের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়েছে।

ওই নেতা মনে করেন, সংসদের ভিতরে একাধিক ইস্যুতে শাসকপক্ষ মমতার সহযোগিতা চাইতে পারে। গত কয়েক বছরে প্রকাশ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করলেও সংসদে একাধিক বিল পাশের সময় ভোটাভুটিতে তৃণমূল সাংসদরা অংশ নেননি। যার সুফল পেয়েছিল বিজেপি। রাজ্যের ভোটে পরাজয়ের পর মোদি-শাহের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে। সামনেই পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা ভোট রয়েছে।

তারপর ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। সেই প্রেক্ষিতে মমতার কাছে সহযোগিতা চাইতেই পারেন মোদি। সেই অঙ্কই ভাবাচ্ছে বিজেপি’র রাজ্য নেতাদের। কারণ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভুলে ভরা রণকৌশলের কারণেই বিধানসভায় রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। রাজ্য নেতাদের একটা বড় অংশ রীতিমতো ক্ষেপে রয়েছেন দিল্লির বড়-মেজ নেতাদের উপর। পাশাপাশি ভোট মিটে যেতেই বাংলা থেকে কার্যত পাততাড়ি গুটিয়েছেন তাঁরা। ভোট পরবর্তী সমস্ত ঝামেলা রাজ্য নেতাদেরই পোহাতে হচ্ছে। সেই সময় মমতার সঙ্গে মোদির এই বৈঠক বিজেপি’র রাজ্য নেতারা ভালোভাবে নিচ্ছেন না। আড়ালে অনেকেই বলছেন, মোদি সামান্য আলগা দিলে মমতা বাংলায় গোটা বিজেপিকে কার্যত গ্রাস করে নেবেন। সেক্ষেত্রে তিল তিল করে গড়ে তোলা পার্টির ভিতটাই নড়ে যাবে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মমতার দিল্লি সফর নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর কথায়, ২০১৯ সালে মমতা ব্রিগেডে দেশের প্রায় সমস্ত অ-বিজেপি নেতাদের নিয়ে মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু দেশের মানুষ লোকসভা ভোটে তাঁদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#delhi, #bjp, #Bengal, #Mamata Banerjee, #Narendra Modi

আরো দেখুন