জহরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিল না কেন গেরুয়া শিবির?
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলা থেকে রাজ্যসভায় (Rajya Sabha) নির্বাচিত হলেন প্রাক্তন আমলা জহর সরকার (Jawhar Sircar)। দীনেশ ত্রিবেদীর ছেড়ে যাওয়া আসনে কোনও প্রার্থী দেয়নি গেরুয়া শিবির। ফলে বিনাযুদ্ধেই জয়লাভ জহরের। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন টুইটার বার্তায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দেন, নির্বাচন ফলাফল কী হতে চলেছে, তা সবাই জানেন, তাই ওই আসনে প্রার্থী দেবে না দল।
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগদান করে রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনেই আগামী ৯ অগস্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এই উপনির্বাচনে তৃণমূলের তরফে প্রার্থী করা হয়েছিল প্রাক্তন আইএএস অফিসার তথা প্রসার ভারতীর প্রাক্তন অধিকর্তা জহর সরকারকে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজে তাঁকে ফোন করে রাজ্যসভার প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে বিজেপির তরফে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ওই আসনে বিজেপি-ও প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। কিন্তু মনোনয়নের শেষ দিন শুভেন্দু জানালেন, রাজ্যসভার উপনির্বাচনে কোনও প্রার্থী দিচ্ছে না বিজেপি। ফলে, বঙ্গ বিজেপির অন্দরের ফাটলটা আবার জনসমক্ষে চলে এল। প্রার্থী দেওয়া নিয়েও যে দিলীপ-শুভেন্দুর ঐক্যমত্য নেই তা বেরিয়ে এল প্রকাশ্যে। কিন্তু, কেন বিজেপি এই সিদ্ধান্ত নিল? শুধুই কি ‘ফলাফল জানা’ বলে? নাকি এর পেছনে অন্য কারণ আছে?
রাজনৈতিক মহলের ধারণা বিজেপির এই চালের অন্যতম কারণ মুকুল রায়। দিলীপ ঘোষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন যাতে মুকুলের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যাক। অন্যদিকে বিজেপির ভয় ছিল, ভোটাভুটি হলে বিজেপির শক্তিহ্রাসের অপ্রিয় সত্যতা সরকারি সিলমোহর পড়বে। মুকুল দল ছাড়ার পর একাধিক বিধায়ক যে তৃণমূলের সাথে যোগাযোগ রাখছেন তা সকলেরই জানা। বিজেপি বিধায়কদের রাজভবন অভিযানেও প্রায় ২৫ জন বিধায়ক অনুপস্থিত ছিলেন।
এই অবস্থায়, দলের ক্ষয়িষ্ণু ছবি জনসমক্ষে এলে সংগঠনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এমনটাই মনে করছে গেরুয়া শিবির। তাই রণে ভঙ্গ দিয়ে আপাতত শাক দিয়ে মাছ ঢাকা হল। কিন্তু পচা মাছের দুর্গন্ধ এইভাবে কতদিন ছড়িয়ে পড়া থেকে আটকাতে সক্ষম হবে গেরুয়া শিবির, সেটাই দেখার।