রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করবে ভারত, আলোচনা আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে
গৃহযুদ্ধে জর্জরিত আফগানিস্তান (Afghanistan) নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। দেশটিতে শান্তি ফেরাতে তৎপর হয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া-সহ বিশ্বের তাবড় দেশ। এহেন সময়ে ভারতের সভাপতিত্বে আফগান ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে।
রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি জানিয়েছেন, ৬ আগস্ট অর্থাৎ আগামীকাল বৈঠকে বসতে চলেছে নিরাপত্তা পরিষদ। ভারতের সভাপতিত্বে হতে চলা এই বৈঠকে আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানো নিয়ে আলোচনা হবে। উল্লেখ্য, এক মাসের জন্য রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছে ভারত। ২০২১-২২ সালে প্রথমবারের জন্য এই দায়িত্ব নিল ভারত। ফ্রান্সের হাত থেকে ১ আগস্ট ভারত রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তার পরিষদের সভাপতিত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে ভারতের কার্যকাল শুরু হয়েছে ২ আগস্ট থেকে। তারপরই টি এস তিরুমূর্তি জানিয়েছিলেন যে ভারত কখনই দায়িত্বপালনে ভয় পায় না। বরাবারই সন্ত্রাসবাদ-সহ একাধিক ইস্যুতে সক্রিয় ভারত। প্রথম থেকেই দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী আগ্রাধিকার বিষয়গুলিতে মনোনিবেশ করা হয়েছে। যেহেতু ভারত এক মাসের জন্য এই দায়িত্ব গ্রহণ করছে সেই কারণে বাকি সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। সংযম আর আলোচনার মাধ্যমেই একাধিক সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজবে বলেও ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, দ্রুত কাবুলের দিকে এগিয়ে আসছে তালিবান (Taliban)। পাহাড়ি দেশটির প্রায় ৩৫০ জেলার মধ্যে অন্তত ১৫০টি দখল করে ফেলেছে জঙ্গি গোষ্ঠীটি বলে দাবি। বেগতিক দেখে কান্দাহার ও হেরাত দূতাবাস থেকে কর্মীদের ফিরিয়ে এনেছে ভারত। এহেন সময়ে নয়াদিল্লিকে বাদ দিয়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও উজবেকিস্তানকে নিয়ে নতুন এক আঞ্চলিক শক্তি (কোয়াড গ্রুপ) তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকা। কয়একদিন আগেই জানা যায় যে আমেরিকা, পাকিস্তান, উজবেকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিরা মিলে একটি চতুর্দেশীয় (কোয়াড) কূটনৈতিক মঞ্চ তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। চতুর্ভুজ শক্তির মূল লক্ষ্যই হবে, আঞ্চলিকস্তরে নিবিড় সংযোগ স্থাপন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু এই প্রচেষ্টায় ভারতকে বাদ দেওয়া হল কেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ওবামা জমানা থেকে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যথেষ্ট মজবুত হয়েছে। মার্কিন হাতিয়ার কেনা থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে রীতিমতো দহরম মহরম মোদি সরকারের। আর এতে পুরনো বন্ধু রাশিয়ার বিরাগভাজনও হতে হয়েছে নয়াদিল্লিকে। তার পরও বাইডেন প্রশাসন এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে ভারতকে শরিক করেনি। এহেন সময়ে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের নেতৃত্বে আফগান ইস্যু নিয়ে আলোচনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।