অন্যান্য রোগীদের দেখা নেই – করোনা আবহে ৭০-৮০ শতাংশ আয় কমেছে বেসরকারি হাসপাতালগুলির
করোনার থাবায় থরহরিকম্প গোটা ভারত। মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে চলছে দেশজোড়া লকডাউন। এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি হাসপাতালগুলির আয় কমেছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। এই ত্রৈমাসিকে আয় ৫৯ হাজার কোটি থেকে কমে হয়েছে ১৮ হাজার কোটি। ক্ষতির মুখ দেখতে হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। আউটডোরে রোগীর দেখা নেই। যেটুকু বা আছে, রীতিমতো আতঙ্ক নিয়ে মাস্ক ও গ্লাভস পরে রোগী দেখছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। দক্ষিণ কলকাতার রেমিডি হাসপাতাল থেকে বাইপাসের ধারে আর এন টেগোর হাসপাতালের চিত্রটা মোটামুটি এক।
৬৮১ শয্যাবিশিষ্ট আর এন টেগোরে অন্যান্য রোগীদের ভিড় নেই বললেই চলে। আর এন টেগোর হাসপাতালের সিইও আর ভেঙ্কটেশ বলেছেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ১০০০ রোগী আসত এখানে। করোনার জেরে এখন তা কমে ৫০ এ দাঁড়িয়েছে।’ বেসরকারি হাসপাতালগুলির আউটডোর ছাড়াও জরুরী বিভাগেও রোগীর ভিড় চোখে পড়ছে না। এমনকী রোগী ও তাঁর পরিবার অস্ত্রোপচারের দিনও বদলে ফেলছেন চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে। করোনা আতঙ্কে অন্য রোগীরা হাসপাতালমুখী হচ্ছেন না।
বেসরকারি হাসপাতালের আয়ের ওপর করোনা মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নার্সিংহোম গুলির আয় কমেছে ৭০-৮০ শতাংশ। অথচ কর্মীদের বেতন, পিপিই কিট সরবরাহ, কর্মীদের নিয়ে আসার জন্য গাড়ি ও থাকার ব্যবস্থা-সহ অন্যান্য খাতে ব্যয় বেড়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলির। যেমন মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালের আয়ের ৮০ শতাংশ আসে অস্ত্রোপচার থেকে। কিন্তু রোগীরা এখন অস্ত্রোপচার করাতে রাজি হচ্ছেন না। আউটডোরে রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। তার ওপর হাসপাতাল কর্মীদের সুরক্ষা বাবদ খরচা বেড়েছে।
দক্ষিণ মুম্বইয়ের ভাটিয়া হাসপাতালের ৫১ জন কর্মী করোনা পজিটিভ হন। যার ফলে অন্তত ৭০০ কর্মীর করোনা পরীক্ষা বাবদ ৩২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে হাসপাতালের। তাছাড়া কর্মীদের পিপিই কিট বাবদ দৈনিক খরচ হচ্ছে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। অন্যদিকে, কলকাতার রুবি হাসপাতালে একজন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর কর্মীদের হাজিরা সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমেছে। তাছাড়া সব কর্মীকে পিপিই কিট দেওয়ার ক্ষেত্রেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমস্যায় পড়েছেন। তার উপর অন্যান্য রোগীর সংখ্যা কম থাকায় বিপুল ব্যয় সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।