পুরুষতন্ত্রকে হেলায় সরিয়ে দিয়ে এই বিখ্যাত বারোয়ারি দুর্গাপুজো করবেন চার নারী পুরোহিত
পুরুষরাই কেবল দেবতার পুজো করবেন, সমাজের এই লিঙ্গবৈষম্যের বেড়াজাল ভেঙেছিলেন নন্দিনী ভৌমিক (Nandini Bhowmick)। তারপর ধীরে ধীরে নারী-পুরুষ ভেদাভেদ ঘুচিয়ে পুজো-পার্বণে দেবতার আরাধনায় নিয়োজিত হতে থাকেন মহিলারা। সমাজের চিরাচরিত চিন্তা-ধারার বদল ঘটিয়ে ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মোটি’ ছবিতেও দেখানো হয় এক মহিলা পুরোহিতের (Women Priests ) সংগ্রামের কাহিনি। এবার কলকাতার দুর্গাপুজোর ইতিহাসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে দক্ষিণ কলকাতার একটি বারোয়ারি ক্লাব। এবছর মায়ের হাতে হবে মায়ের আবাহন!
ব্যাপারটা খোলসা করে বলা যাক। দক্ষিণ কলকাতার ৬৬ পল্লি দুর্গাপুজো ( 66 Pally Durgotsab) কমিটি অসাধ্যসাধন করতে চলেছে। কলকাতার দুর্গাপুজোর ইতিহাসে প্রথমবার দুর্গাপুজোর দায়িত্ব চার নারীর কাঁধে। মায়ের আবাহন করবেন মায়েরাই। পুজোর দায়িত্বে চার পুরোহিত- নন্দিনী, রুমা, সেমন্তী এবং পৌলমী। শারদোৎসবে এবছর কলকাতায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ হতে চলেছে এই পুজো। যেখানে নারী-পুরুষ ভেদাভেদকে দূরে সরিয়ে নারীশক্তির জয়গান গাইবেন এই চারজন।
প্রতিবছরই পুজোর থিমে অভিনবত্ব আনে ৬৬ পল্লি। গতবার সত্যজিৎ রায়ের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে কলকাতায় সত্যযুগ ফিরিয়ে এনেছিল তিন পুজো কমিটি। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল ৬৬ পল্লি। মানিকবাবুর কালজয়ী অপু ট্রিলজি-কে থিমে তুলে ধরেছিল, ৬৬ পল্লি, বাদাতলা আষাঢ় সংঘ এবং নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট পুজো কমিটি। সেবার ৬৬ পল্লির থিমমেকার ছিলেন শিল্পীদ্বয় ঈশিকা চন্দ ও দীপ দাস। এবারও তাঁদের কাঁধেই দায়িত্ব ন্যস্ত। আগামী ২২ আগস্ট খুঁটিপুজোর মধ্যে দিয়ে এবছর শারদোৎসবের আবাহন করবে এই পুজো কমিটি।
পুজোর অন্যতম কর্মকর্তা প্রদ্যুম্ন মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “এবার মায়ের হাতে মায়ের আবাহন হবে ৬৬ পল্লির পুজোয়। পুজোর দায়িত্বে চারজন মহিলা পুরোহিত। সমস্ত আচার মেনে হবে পুজো। পুজোর কাজকর্মে নারী-পুরুষ ভেদাভেদ মেটানোই মূল উদ্দেশ্য। মা দুর্গা সবার আরাধ্য। তাতে লিঙ্গবৈষম্য থাকবে কেন!” সবমিলিয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হবে এবারের পুজোর কলকাতা।