লকডাউনে ময়দানের কর্মহীন ঘোড়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এগিয়ে এল প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগ
বর্ষাকাল বা কনকনে শীত। ভিক্টোরিয়ার(Victoria Memorial) সামনে দিয়ে ময়দান(Maidan) চত্ত্বরে ঘোড়ায় চড়ে এক চক্কর দিতে কার না ভাল লাগে! কিন্তু করোনাকালে ঘোড়ায় চড়ে শহর-ভ্রমণ মানা। করোনা মোকাবিলায় দীর্ঘ দিনের কড়াকড়িতে মালিকের সঙ্গে কর্মহীন হয়ে পড়েছে ঘোড়াগুলিও। পেটে ঠিক মতো খাবার নেই। এখন ময়দান চত্ত্বরেই ইতিউতি ঘুরে খাবার খুঁজছে তারা। দেখাশোনার অভাবে স্বাস্থ্য ভেঙেছে। সেই সব ঘোড়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এ বার এগিয়ে এল প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগ। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে নিয়মিত ঘোড়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
করোনাকালে কড়াকড়ির আগে বিকেল থেকেই ভিক্টোরিয়ার সামনে পর্যটকদের জয় রাইডে নিয়ে যাওয়ার জন্য মালিকের সঙ্গে ঘোড়ারাও প্রস্তত থাকত। করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক অনটনে ঘোড়ার মালিকরা। এই অবস্থায় ঘোড়াদের পর্যাপ্ত খাবার মালিকের পক্ষে জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। “সে জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন ঘোড়ার মালিকরা”— বলেন স্বপন। ঘোড়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সঙ্গে খাবার দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে ইনস্টিটিউট অব অ্যানিমেল হেল্থ অ্যান্ড ভেটেরিনারি বায়োলজিক্যাল থেকে চার পশু চিকিৎসক ময়দানে গিয়ে আটটি ঘোড়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৫০টি ঘোড়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে বলে জানিয়েছে প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগ। নজর দেওয়া হচ্ছে ঘোড়ার বাচ্চাদের দিকেও। ঘোড়ার মালিকদের সঙ্গেও চিকিৎসকরা কথা বলেছেন বলে জানান এক আধিকারিক।
শুধু ময়দান নয়, হেস্টিংস এলাকায় থাকা ঘোড়াদেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেছে প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগ। পাশাপাশি তাদের শারীরিক অবস্থা বুঝতে এবং কোনও রোগ বাসা বেঁধেছে কি না তা দেখতে ঘোড়াদের রক্ত এবং মল পরীক্ষাও করা হচ্ছে বলে জানান স্বপন। এখনও পর্যন্ত ৩১টি ঘোড়ার রক্ত এবং আটটি ঘোড়ার মলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনটি ঘোড়ার বাচ্চারও মলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে পরীক্ষার জন্য।
আগামী সপ্তাহ নাগাদ এই পরীক্ষার ফল আসতে পারে বলে জানান এই বিভাগের এক আধিকারিক। স্বপনের কথায়, ‘‘ঘোড়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যদি কোনও রোগ ধরা পড়ে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি মালিক পক্ষ। ঘোড়াদের খাবার ব্যবস্থাও করা হলে নিশ্চিন্ত হতে পারবে লকডাউনে কাজ হারানো অবলা ঘোড়াগুলিও।