পুজোর আগেই ৮০ শতাংশ পূর্ণ টিকাকরণের লক্ষ বাংলায়
রাজ্যের শহরাঞ্চলের প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজনই করোনা টিকার প্রথম ডোজ পেয়ে গিয়েছেন। মঙ্গলবার স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। গ্রামীণ এলাকার টিকাকরণ বাড়ানোর পাশাপাশি রাজ্যের এখন লক্ষ্য পুজোর আগেই শহরাঞ্চলের অন্তত ৭০-৮০ শতাংশ মানুষের দুটি ডোজের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করা।
মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শহরাঞ্চলের প্রায় ৭৩ শতাংশ (৭২.৮৪ শতাংশ) মানুষই পেয়েছেন টিকার প্রথম ডোজ। রাজ্যের শহরাঞ্চলের ১৮ ঊর্ধ্ব ১ কোটি ৬১ লক্ষ মানুষ টিকা পাওয়ার যোগ্য। এখনও পর্যন্ত প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে এক কোটি ১৭ লক্ষকে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ২০ লক্ষ মানুষ। কলকাতা সহ বেশকিছু শহরে প্রথম ডোজের টিকাকরণ প্রায় শেষের দিকে। স্বাস্থ্যদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতায় প্রথম ডোজই পেয়েছেন ৩৮.১৪ লক্ষ মানুষ। শুধু কলকাতা পুরসভা এলাকাতেই টিকা পেয়েছেন ২৪ লক্ষ ৪৯ হাজার ১৯২ জন।
বিভিন্ন জেলার হিসেবে অবশ্য প্রথম ডোজ পাওয়াদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার নিরিখে কলকাতা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে খুব ভালো টিকাকরণ হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান ও হুগলিতে। পূর্ব মেদিনীপুর ও পূর্ব বর্ধমানে যথাক্রমে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ছয় লক্ষ ৬০ হাজার ও নয় লক্ষ ৫৩ হাজার মানুষ। দুই জেলাতেই সেখানে প্রথম ডোজ পাওয়াদের মধ্যে তিন লক্ষ ৩০ হাজার ও চার লক্ষ ৫৯ হাজার জন টিকা পেয়েছেন। প্রথম ডোজ পাওয়াদের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার হার এই দুই জেলায় যথাক্রমে ৫০ শতাংশ এবং ৪৮ শতাংশ। হুগলিতে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৪ লক্ষ ৪৮ হাজার মানুষ। তাদের ছয় লক্ষ ৪৭ হাজারই পেয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ। এক্ষেত্রে এই হার প্রায় ৪৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, শহরাঞ্চলের করোনা টিকাকরণ দ্রুত সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশা রাখছি। এতে সুপারস্প্রেডারদের টিকাকরণ অনেকটাই হয়ে যাবে। ততদিন রাজ্যবাসীর কাছে আমাদের আর্জি, দয়া করে মাস্ক ও করোনা বিধি নিয়ে শিথিলতা দেখাবেন না।
অনেকেরই মনের প্রশ্ন, গ্রামীণ এলাকায় এখনও পর্যন্ত কত টিকাকরণ হয়েছে? সূত্রের খবর, গ্রাম ও শহরাঞ্চল বাংলার এই দুই এলাকাতেই প্রায় সমান সমান টিকাদান হয়েছেন। কিন্তু শহরাঞ্চলের জনসংখ্যা যেহেতু গ্রামাঞ্চলের তুলনায় অনেকটাই কম (৩৫:৬৫), এই টিকাকরণেরই শহরাঞ্চলের গড়পড়তা ৭৩ শতাংশ মানুষের প্রথম ডোজ পাওয়া হয়েছে। গ্রামীণ এলাকার ক্ষেত্রে যা তুলনায় অনেক কম হয়েছে। সার্বিকভাবে রাজ্যের টিকা পাওয়ার যোগ্য ১৮ ঊর্ধ্ব জনসংখ্যার কমবেশি ৩৮ শতাংশই করোনার প্রথম ডোজ পেয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন জনসংখ্যার প্রায় ১৩ শতাংশ, যা জাতীয় গড়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি। জাতীয় গড় ৭.৮ শতাংশ। প্রথম ডোজ প্রাপকদের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার হারেও বাংলা বাকি রাজ্যগুলির থেকে এখনও অনেকটা এগিয়ে। প্রায় ৪০ শতাংশ।