বাড়তি ভাড়া নিলে কড়া ব্যবস্থা, বেসরকারি বাস সংগঠনগুলিকে হুঁশিয়ারি রাজ্যের
বেসরকারি বাস-মিনিবাসের ইচ্ছামতো বাড়তি ভাড়া আদায় করার ঘটনায় এবার কড়া অবস্থান নিল পরিবহণ দপ্তর। অবিলম্বে এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ না করলে রাজ্য সরকার কঠোরতম ব্যবস্থা নেবে। বুধবার কলকাতার রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটির সচিব এই মর্মে চিঠি দিয়ে একাধিক বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনকে কার্যত সতর্ক করেছেন। প্রসঙ্গত, গত দেড় বছর বাসভাড়া ইস্যুতে বেসরকারি বাস মালিকদের সঙ্গে নবান্নের স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। করোনা আবহে সাধারণ মানুষের তীব্র আর্থিক সঙ্কটের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতিরিক্ত বাসভাড়ার দাবিকে সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন। যাত্রীদের অভিযোগ, গত কয়েক মাসে বেসরকারি বাসে উঠলেই ইচ্ছামতো বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে একই অভিযোগ জমা পড়ে। তারপরই মন্ত্রী নিদান দেন, বাড়তি ভাড়া নিলে টিকিট সহ সংশ্লিষ্ট রুটের বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। প্রয়োজনে বাসের পারমিট বাতিল করা হবে।
পরিবহণ দপ্তরের এই কড়া চিঠিকে মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূরণ হিসেবেই দেখছেন বিভাগীয় কর্তারা। সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া সংক্রান্ত অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়ছে। অবিলম্বে ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ সালের আরটিএ বোর্ড মিটিংয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুরানো চার্ট মেনে সরকার নির্ধারিত ভাড়াই নিতে হবে। অন্যথায় মোটর ভেহিকেল আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, বৃহত্তর কলকাতায় আমাদের সংগঠনের কোনও কার্যালয়ে বাড়তি ভাড়া সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। গণপরিবহণে বাস সবচেয়ে সস্তার যান। সাধারণ যাত্রীরা সাগ্রহে অনুদান যুক্ত কিছু বাড়তি ভাড়া দিচ্ছেন। কারণ বিকল্প মাধ্যমে পরিবহণ খরচ তুলনামূলক অনেক বেশি। করোনাকালে গত দু’বছরে কার্যত কোমায় চলে যেতে বসা বেসরকারি বাসকে নিয়মিত রাস্তায় বেরত গেলে যাত্রীদের থেকে এই অনুদান গ্রহণ ছাড়া বিকল্প নেই বলেও মনে করেন টিটুবাবু।
অন্যদিকে, অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, নিয়মবহির্ভূত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখা দরকার। ভাড়াকে ঠিক রেখে কিছু দান চাওয়া যেতেই পারে। দু-তিন টাকা যাত্রীদের থেকে সাহায্য চাওয়া যেতেই পারে। কিন্তু ৯ টাকার ভাড়া ১৫ টাকার টিকিট ছাপিয়ে আদায় করলে তা পুরোপুরি বেআইনি। সাফ জানান তিনি। উল্টো দিকে, রাজ্য সরকারের প্রতি রাহুলবাবুর আবেদন, বাসের আয় নিয়ন্ত্রণ করলে ব্যয়টাও নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।