রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

চাপে পড়েই উত্তরবঙ্গ নিয়ে সুর বদল দিলীপের? জল্পনা শুরু

August 21, 2021 | 2 min read

আলাদা উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি অন্যায্য নয়। এমনকী পৃথক জঙ্গলমহল রাজ্যের দাবিকেও সমর্থনই জানালেন রাজ্য বিজেপি (BJP) সভাপতি। শনিবার জলপাইগুড়িতে দাঁড়িয়েই উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্যে করার দাবিতে নিজের সমর্থন জানালেন দিলীপ। সেটাও আবার এই দাবি তুলে বিতর্কে জড়ানো আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লার উপস্থিতিতে। বললেন, ‘‘মানুষের কথা বললেই কি বিচ্ছিন্নতাবাদী বলতে হবে নাকি!’’

বার্লা উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবি তোলার সময়েও দিলীপ তার বিরোধিতা করেননি। আবার এ ভাবে সমর্থনও জানাননি। তবে সেই দাবি ওঠার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তথা তৃণমূল সরকারকেই দায়ি করেছেন তিনি। শনিবার দিলীপ বলেন, ‘‘আজ যদি জঙ্গলমহল এবং উত্তরবঙ্গ আলাদা হতে চায় তার সমস্ত দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।’’ একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, গত ৭৫ বছর ধরে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন হয়নি। কেন এখানকার মানুষকে চিকিৎসা, শিক্ষা, চাকরি, স্বাস্থ্য ইত্যাদির জন্য বাইরে যেতে হবে। কেন হাসপাতাল, ভাল, স্কুল নেই? কেন কল কারখানা, জীবিকার ব্যবস্থা নেই? জঙ্গলমহলেও সেই অবস্থা। মা, বোনেরা শালপাতা, কেন্দুপাতা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। কেন তাঁদের চাকরির জন্য রাঁচি, ওড়িশা, গুজরাতে যেতে হচ্ছে? এই দেশের স্বাধীনতা, উন্নয়নের লাভ পাওয়ার অধিকার নেই তাঁদের? তাই তাঁরা যদি এই দাবি তুলে থাকেন তা হলে সেটা নাজায়েজ নয়।’’

সদ্য মন্ত্রী হওয়া বার্লার সুরে দিলীপের (Dilip Ghosh) সুর মেলানো নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তবে শনিবার দিলীপ ওই মন্তব্যের সঙ্গে বিজেপি-র উল্টো অবস্থানের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘‘দলের একটা নীতি আছে। দল ভেবে দেখবে। গোর্খাল্যান্ডের দাবি তো অনেক বছর ধরে উঠছে। দিদিমণি তো সমঝোতা করে সরকারও চালিয়েছেন।’’

শনিবার বিজেপি-র উত্তরবঙ্গে বার্লার ‘শহিদ সম্মান যাত্রা’ কর্মসূচিতে যোগ দেন দিলীপ। ওই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে দিলীপ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘জন বার্লা এক জন জনপ্রতিনিধি। যাঁরা তাঁকে জিতিয়েছেন তাঁদের কথা শোনাটা তাঁর দায়িত্ব। তিনি তাই বলেছেন।’’ সেই সঙ্গে পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের দাবি প্রসঙ্গে দিলীপ মমতার নাম না করেও খোঁচা দেন। বলেন, ‘‘উনি তো গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে জিইয়ে রেখে জিটিএ-তে সই করেছিলেন। তখন প্রশ্ন ওঠেনি? যখন লোকের আওয়াজকে আমরা তুলে ধরেছি, তখন আমরা বিচ্ছিন্নতাবাদী হয়ে গেলাম?’’

দিলীপের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তৃণমূলের জেলা সম্পাদক রাজেশ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘বিজেপি বরাবরই রাজ্য ভাগের চক্রান্ত করছে। কখনও জন বার্লা বলছেন। কখনও দিলীপ ঘোষ বলছেন। বিজেপি মুখে যাই বলুক, এতে দলেরও মদত রয়েছে। কিন্তু তৃণমূল রাজ্য ভাগ হতে দেবে না।’’

রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়লেও উত্তরবঙ্গে তুলনামূলক ভাবে ভাল ফল করে। এর পরেই পৃথক রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে বিতর্ক তৈরি করেন বার্লা। তখন তিনি মন্ত্রী হনন। দিলীপ সেই সময় বলেছিলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত হয়েছে। তাই উত্তরবঙ্গের মানুষ হয়ত বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা বলছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ের তলার মাটি নেই। কখনও গুরুং, কখনও কামতাপুরীদের সঙ্গে জোট বেঁধে জেতার চেষ্টা করেছে তৃণমূল। আর সেই দলই আজ আমাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী বলছে?’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#dilip ghosh

আরো দেখুন