রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

এবছর ইজেডসিসি-তে দুর্গাপুজো করবে কে? ধন্ধে রাজ্য বিজেপি

August 23, 2021 | 2 min read

মুকুল রায় তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। কৈলাস বিজয়বর্গীয় বাংলা থেকে একপ্রকার পাততাড়ি গুটিয়েছেন। সব্যসাচী দত্ত দলে থেকেও নেই। অরবিন্দ মেনন মন দিয়েছেন ঘর-সংসারে।

তা হলে দুর্গাপুজো করবেন কারা! চিন্তা বাড়ছে  বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের। গত বছর সল্টলেকের ইজেডসিসি-তে এঁরাই ঢাকঢোল পিটিয়ে দুর্গাপুজো করেছিলেন বিজেপির ব্যানারে। মণ্ডপে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী ডোনার নৃত্যানুষ্ঠান, বাউল মেলা, নামীদামি শিল্পীদের নিয়ে চারদিন ধরে জলসা, প্রতিদিন দুপুরে ভূরিভোজ। তার উপরে ষষ্ঠীর দিন পুজো মণ্ডপে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভার্চুয়াল ভাষণ। সব মিলিয়ে সে এক এলাহি আয়োজন!

কিন্তু এ বছর কী হবে? জৌলুস ছেঁটে নমো-নমো করে পুজো সারলে লোকে যে খোঁটা দেবে! আবার গত বছরের মতো আয়োজন করাও চাট্টিখানি কথা নয়। রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতার আক্ষেপ, ‘ইজেডসিসি কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠান হলেও সেখানে দুর্গাপুজোর অনুমতি পেতে রীতিমতো কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। কৈলাসজি, মুকুল রায়রা উদ্যোগ না-নিলে ছাড়পত্র মিলত না। এ বছর সে সব ঝক্কি কে সামলাবেন? তা ছাড়া তখন বিজেপির পালে হাওয়া ছিল। কর্মীদের জোশ ছিল। তারকাদের আনাগোনা ছিল। সব মিলে পুজো জমে গিয়েছিল। এ বছর তো ঢাকি জোগাড় করতেই নেতাদের ছুটতে হবে!’

রীতি অনুযায়ী একবার দুর্গাপুজো শুরু করলে টানা অন্তত তিন বছর করতেই হয়। ফলে পুজো বন্ধ করে দিতেও ভরসা পাচ্ছেন না রাজ্য বিজেপির অনেকে। তাঁদের আশঙ্কা, তিন বছর পুজো না-করলে যদি অমঙ্গল হয়? দলের এক প্রবীণ নেতার উদ্বেগ, ‘এমনিতেই আমাদের শনির দশা কাটছে না। তার উপরে আবার মা দুর্গা বিরাগভজন হলে বিপদের আর শেষ থাকবে না। গত বছর পার্টির অনেকে পইপই করে দলীয় উদ্যোগে পুজো করতে নিষেধ করেছিলেন। কৈলাসজিরা পাত্তা দেননি। মায়ের পুজো যখন শুরু হয়েছে, তিন বছর করতেই হবে। ঘট পুজো হলেও করতে হবে।’

অতীতে কোনও রাজনৈতিক দলের ব্যানারে দুর্গাপুজো হওয়ার নজির নেই বাংলায়। গত বছর বিজেপি ঠিক করে, ভোটের আগে বাংলার মানুষের মন ছুঁতে তারা দুর্গাপুজো করবে। তাতে অবশ্য বিজেপির তৎকালীন সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ঘোর আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, দুর্গাপুজো করা কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে না। তাতে কর্ণপাত না করে কৈলাস-মুকুলরা ঠিক করেন পুজো হবেই। এবং সেটা হবে দলের সাংস্কৃতিক সেলের ব্যানারে।

ভোটে হারার সুবাদে বিজেপির সেই সেল এখন নাম-কে-ওয়াস্তে আছে বলে দলের একাংশের দাবি। গত বছর বিজেপির দুর্গাপুজোয় মুকুল-কৈলাসের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের ভূমিকায় ছিলেন রাজ্য বিজেপির আদি নেতা তথা দলের সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কাছে দলের দুর্গাপুজোর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এখনও আমরা এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। আলোচনা করে ঠিক করা হবে।’ দিলীপ-ঘনিষ্ঠ রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘বিভিন্ন পুজো কমিটির সঙ্গে নেতাদের যুক্ত হওয়াটাই কাম্য। গত বছরও ইজেডসিসিতে পুজো দেখতে গিয়েছিলাম। এ বছর পুজো হলেও যাব।’ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘বিজেপিকে হল ভাড়া করে পুজো করতে হয়। উদ্যোক্তারাও ভাড়াটে। আসলে বিজেপি নেতারা নিজেদের পাড়ার পুজো কমিটিতেই কল্কে পান না। তাই নিজেরা হল ভাড়া করে গত বছর পুজো করেছিলেন। তৃণমূলে এ সব সমস্যা নেই।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga Pujo, #bjp, #ezcc

আরো দেখুন