উত্তরবঙ্গের মানুষের বঞ্চনার অবসান ঘটিয়েছেন মমতা: তৃণমূল
উত্তরবঙ্গের মানুষের প্রতি বঞ্চনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আক্রমণ শুরু করেছে বিজেপি। হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে পৃথক রাজ্যের দাবিও। পরিস্থিতি যখন এমনই তখন তৃণমূলও বুঝিয়ে দিতে চাইছে, ফাঁকা মাঠ দেওয়া হবে না গেরুয়া শিবিরকে। খেলা হবে।
এবার উত্তরবঙ্গ নিয়ে পাল্টা প্রচারে নামতে চলেছে শাসকদল। তুলে ধরা হবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় কী কী কাজ হয়েছে কোচবিহার থেকে মালদহ পর্যন্ত।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তথ্য পরিসংখ্যান নিয়ে ময়দানে নামতে চলেছে শাসকদল। বাম জমানায় উত্তরবঙ্গের কী অবস্থা ছিল এবং গত ১০ বছরে কী কী হয়েছে, তার তুলনামূলক ছবিটা মানুষের সামনে তুলে ধরতে চাইছে শাসকদল। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, তৃণমূল বলছে না যে উত্তরবঙ্গের মানুষের প্রতি বঞ্চনা হয়নি। বরং তারা তুলে ধরতে চাইছে, যে বঞ্চনা চলছিল তার অবসান হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে।
পরিকাঠামো, হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ, পর্যটন ক্ষেত্র—ইত্যাদিতে কত খরচ হয়েছে, কী কী মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে সেওসব নিজদের প্রচারে তুলবে তৃণমূল। হতে পারে সরকারও পৃথক ভাবে কী কী কাজ হয়েছে তার খতিয়ান তুলে ধরবে। তার আঙ্গিক কী হবে তা এখনও চূড়ান্ত না হলেও, মোটের উপর এটা ঠিক হয়ে গিয়েছে বিজেপিকে জবাব দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে মানুষকেও বলা হবে, ১০ বছরে একটা বড় বদল হয়েছে উত্তরবাংলায়।
তা ছাড়া উত্তরবঙ্গের জন্য পৃথক সচিবালয় উত্তরকন্যা নির্মাণ, বিচার ব্যাবস্থার সুবিধা করে দিতে সার্কিট বেঞ্চ তৈরি, চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষার প্রকল্প বাস্তবায়িত করা, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, স্বাস্থ্যসাথীর মতো প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন—এই সবই প্রচারে তুলবে তৃণমূল।
উনিশের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে তৃণমূল শূন্য হয়ে গিয়েছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে একুশের ভোটে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে শাসকদল। তা হলেও বিজেপির গণভিত্তি ভাঙেনি। বরং দেখা যাচ্ছে, একুশের ভোট হয়ে যাওয়ার পর থেকে উত্তরবঙ্গেই বেশি ফোকাস করেছে গেরুয়া শিবির। হতে পারে সেটা আঁচ করেই ময়দানে নামার পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
দিলীপ ঘোষরা যে বঞ্চনার কথা বারবার করে বলছেন, গতকাল তারই জবাব দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমানায় উত্তরবঙ্গে সচিবালয় গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি দফতরের কাজ সেখান থেকে পরিচালিত হয়। তাতে সরকারের বিপুল টাকা খরচ হয়। উত্তরবঙ্গের মানুষের স্বার্থেই এই অর্থ খরচ করে সরকার। অনেকের মতে, বিজেপি এটা তুলে ধরতে চাইছ উত্তরবঙ্গের মানুষের টাকায় দক্ষিণ বঙ্গের বিকাশ হচ্ছে। শাসকদল সেটাকেই কাউন্টার করতে চাইছে।