ঐতিহ্যের টয়ট্রেন বেসরকারীকরণের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের! প্রতিবাদে সরব পর্যটন ব্যবসায়ীরা
টয়ট্রেন! ১৯৯৯ সালের ২রা ডিসেম্বর ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পায় পাহাড়ের এই খেলনা গাড়ি। শৈলশহরে টয়ট্রেন যেন পর্যটকদের বাড়তি উন্মাদনা, আকর্ষণ! সেই আকাবাঁকা পথ বেয়ে আকাশে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে ছুটে যাওয়া! বিদেশী পর্যটকদের কাছে যার চাহিদা অতুলনীয়। এনজেপি থেকে দার্জিলিং! জার্নিতে ঝক্কি থাকলেও পর্যটকেরা নাছোড়! পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে টয়ট্রেন রাইড আর টাইগার হিল সফর না হলে পুরো ট্রিপটাই যেন অধরা থেকে যায়। আন্দোলন, ধসের জেরে মাঝেমধ্যেই বন্ধ থাকে এই পরিষেবা। তবে দার্জিলিং ও ঘুমের মধ্যে জয়রাইড পরিষেবার চাহিদা ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়েও মেটাতে পারে না দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এবার সেই হেরিটেজ টয়ট্রেন বেসরকারীকরণের পথে। এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রের এই বেসরকারীকরণের বিরোধী উত্তরবঙ্গের ট্যুর অপারেটার্সরা। বেসরকারীকরণ হলে আদৌও কি ইউনেস্কো টয়ট্রেনের হেরিটেজ তকমা রাখবে? প্রশ্ন ট্যুর অপারেটার্সদের। কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব বিবেচনার দাবী জানাবে উত্তরের ট্যুর অপারেটার্সদের সংগঠন। আদতে পর্যটন শিল্পের ওপর বড় ক্ষতি হবে। বলছেন হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্যুরিজম ডেভলোপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারন সম্পাদক সম্রাট সান্যাল। তাঁরা শীঘ্রই কেন্দ্রের কাছে চিঠিও পাঠাবেন। একই সুর রাজ্যের প্রাক্তন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের গলাতেও। তিনি জানান, একের পর এক লাভজনক সংস্থা বেসরকারীকরণ করছে কেন্দ্র। হেরিটেজ টয়ট্রেন বেসরকারীকরণ করা হলে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভ্রমণ হাতের নাগালের বাইরে চলে যাবে। আরো ব্যয়বহুল হবে। এর বিরুদ্ধে সর্বোস্তর পর্যন্ত আন্দোলন হবে। এই ধরনের সিদ্ধান্ত দূর্ভাগ্যজনক।
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে ইণ্ডিয়া সাপোর্ট গ্রুপের সেক্রেটারি জেনারেল রাজ বসু জানান, বেসরকারীকরণের প্রক্রিয়া করা যেতে পারে। কিন্তু তাতে হেরিটেজ টয়ট্রেনের তকমা যেন অক্ষুন্ন থাকে। তিনটি ক্ষেত্র বাঁচিয়ে বেসরকারীকরণ করা যেতে পারে। কারণ টেকনিক্যাল পার্ট দেখবে রেল। ধসের জেরে মাঝেমধ্যেই বন্ধ থাকে এনজেপি এবং দার্জিলিংয়ের মধ্যে এই পরিষেবা। শুধুমাত্র বানিজ্যের জন্যে বেসরকারীকরণ করা হলে ভালো হবে না। শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ অবশ্য এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি জানান, এতে পর্যটন শিল্পে আরো বিকাশ হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে এবং পরিষেবার মানও বাড়বে।