এবার নিজ উদ্যোগেই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র গড়বে রাজ্য
এবার নিজের উদ্যোগেই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট গড়বে রাজ্য সরকার। আপাতত পাঁচটি ইউনিট তৈরি করা হবে, যেখানে হিমঘর থেকে শুরু করে কমন ফেসিলিটি সেন্টার ও অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। প্রতিটি ইউনিটে একাধিক সংস্থা তাদের উৎপাদন শুরু করতে পারবে। মঙ্গলবার মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসে একথা জানালেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সুব্রত গুপ্ত। তিনি বলেন, তাঁদের দপ্তরের আওতায় যে ফার্মগুলি আছে, সেগুলির মধ্যে থেকেই পাঁচটি জায়গায় ওই ইউনিট গড়ে তোলা হবে। এতে জমি পেতে সমস্যা হবে না।
এদিন সুব্রতবাবু বলেন, রাজ্যে যে পরিমাণ সব্জি ও ফল উৎপাদিত হয়, তার মাত্র ২.৮ শতাংশ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের কাজে লাগে। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রের তুলনায় তা সামান্য বেশি হলেও, বাস্তবে এই হার মোটেই আশানুরূপ নয়। অন্যদিকে চাষি যে পরিমাণ ফসল উৎপাদন করেন, তার ২৭ শতাংশ নষ্ট হয়। এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুব্রতবাবু। তাঁর কথায়, শিল্পোদ্যোগীরা যাতে হিমঘর তৈরিতে উদ্যোগী হন, তার জন্য ৩৫ শতাংশ ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরও বেশি করে উন্নত মানের সব্জি ও ফল উৎপাদনের জন্য ভালো প্রজাতির চারা গাছ দেওয়া হচ্ছে চাষিদের। গত বছর ৭৭ লক্ষ চারা বিলি করা হয়েছে।
সব্জি চাষে দক্ষতা বৃদ্ধিতে হুগলির চুঁচুড়ায় উৎকর্ষ কেন্দ্র চালু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুব্রত গুপ্ত। তিনি বলেন, ইজরায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই উৎকর্ষকেন্দ্র চালু হয়েছে গতমাসে, যেখান থেকে কৃষকরা সরাসরি ট্রেনিং নিতে পারবেন। অন্যদিকে ফল, বিশেষত কলা চাষের ক্ষেত্রে যাতে আরও ভালো উৎপাদন সম্ভব হয়, তার জন্য নদীয়ার আয়েশপুরে একটি টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি তৈরি হয়েছে। সেটি পিপিপি মডেলে চালানোর পরিকল্পনা করেছে রাজ্য। এর জন্য আগামী মাসেই আগ্রহপত্র চাওয়া হবে।
বেশ কয়েকটি দেশে সব্জি বা ফল পাঠানোর ক্ষেত্রে গামা রেডিয়েশন জরুরি। উৎপাদিত পণ্যগুলিকে বিষমুক্ত করতেই ওই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। সেই পরিকাঠামো না থাকায় রপ্তানিতে মার খাচ্ছে আম থেকে শুরু করে হরেক রকমের ফল ও সব্জি। চুঁচুড়ায় এই সংক্রান্ত পরিকাঠামো তৈরির চেষ্টা করা হলেও, তা বছরের পর বছর কার্যকর করা যায়নি। সুব্রতবাবু বলেন, গত মাসে ভাবা অ্যাটোমিক রিসার্চের অধীন বোর্ড অব রেডিয়েশন অ্যান্ড আইসোটোপ টেকনোলজির কর্তার সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়েছে। তারাই নতুন করে পরিকাঠমো ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে। এতে পণ্য রপ্তানিতে অনেকটা এগতে পারবে রাজ্য, দাবি করেছেন সুব্রতবাবু।