দীর্ঘ অবহেলার অবসান, কৈখালি পর্যটন কেন্দ্র সেজে উঠছে নতুন করে
কয়েক বছর ধরে অবহেলিত সুন্দরবনের কুলতলির কৈখালি পর্যটন কেন্দ্র শীতের আগেই নতুনভাবে সেজে উঠতে চলেছে। এর জন্য একাধিক উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কুলতলির বিধায়ক গণেশ মণ্ডল বলেন, এই পর্যটনকেন্দ্রকে মানুষের বেড়ানোর একটি জায়গা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। বিধায়ক তহবিল, পঞ্চায়েত সমিতি, সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ, পূর্ত সড়ক দপ্তর থেকে বরাদ্দ অর্থে এই কাজ করা হবে। নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমের সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হবে।
কুলতলি ব্লকের গোপালগঞ্জ পঞ্চায়েতের অধীন কৈখালি। কুলতলির প্রাণকেন্দ্র জামতলা থেকে ১৪ কিমি দূরে এই পর্যটনকেন্দ্রটি। মাতলা নদীর ধারে প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যটকদের মুগ্ধ করে। কৈখালি থেকেই লঞ্চ বা বোটে চেপে পর্যটকরা একদিকে যেমন সুন্দরবনের ঝড়খালি, বনি ক্যাম্প, কলসদ্বীপে যান, তেমনই সজনেখালি, দোবাঁকি, সুধন্যখালিতে যাওয়া যায়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভরা মরশুমে পর্যটকদের ভালোই ভিড় হয় এই জায়গায়। কিন্তু কয়েকবছর ধরে উন্নয়নের প্রশ্নে পর্যটনকেন্দ্রটি অবহেলিত বলে অভিযোগ করেন বাসিন্দারা। নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমের লজ ছাড়া পর্যটকদের জন্য আর কোনও থাকার জায়গা নেই। উম-পুনের পর থেকে জেটিঘাট ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। আলোর ব্যবস্থা থেকে শুরু করে পর্যটকদের বসার ব্যবস্থা, শৌচালয় কোনওটি নেই। বেড়াতে গিয়েও পর্যটকদের ফিরে আসতে হয়। সম্প্রতি এই পর্যটনকেন্দ্রর উন্নয়নের ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছেন বিধায়ক গণেশ মণ্ডল। ইতিমধ্যেই বিধায়ক, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমের মহারাজ এই জায়গা পরিদর্শন করেছেন। তারপরেই উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, জেটিঘাট ও লজের কাছে দু’টি হাইমাস্ট আলো বসানো হবে। নির্মাণ করা হবে কমিউনিটি শৌচালয়। নদীর পাড়ে ২০টির মতো ত্রিফলা আলো লাগানো হবে। পানীয় জলের কলের ব্যবস্থা থাকবে। জামতলা থেকে কৈখালি পর্যন্ত রাস্তার পাশে বিভিন্ন গাছ বসানো হবে। জেটিঘাট নির্মাণের জন্য পূর্ত সড়ক দপ্তরের টিম সার্ভে করে গিয়েছে। পাশাপাশি, পুরানো জেটিও সংস্কার করা হবে। বিধায়ক বলেন, নদীর পাড়ে পর্যটকদের থাকার জন্য ছোট কটেজ নির্মাণের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কৈখালিতে পর্যটকদের কোনও অসুবিধায় না পড়তে হয় তার জন্য সব দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও এই উদ্যোকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। অনেকেই বলেন, সরকারিভাবে পর্যটনকেন্দ্রের বিকাশের চিন্তাভাবনা করা হলে এলাকার অর্থনৈতিক চেহারাও বদলে যাবে।