পুজোয় বিদ্যুৎ চাহিদা সামলাতে তৈরি রাজ্য
এবার পুজোয় মহাষষ্ঠীতে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুতের চাহিদা হবে রাজ্যে। এমনটাই মনে করছে বিদ্যুৎ দপ্তর। সেই চাহিদা মেটাতে এবং পুজোপর্ব সুষ্ঠুভাবে সামাল দিতে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার, তা নেওয়া হচ্ছে, এমনটাই দাবি করলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার পুজোয় বিদ্যুতের জোগান সংক্রান্ত বৈঠক করেন তিনি। কোল ইন্ডিয়া সহ বিদ্যুতের সঙ্গে সম্পর্কিত সব সংস্থার কর্তারা ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের চাহিদা কত হতে পারে, আমরা তার একটা বিজ্ঞানসম্মত হিসেব কষেছি। সেখানে দেখা যাচ্ছে ষষ্ঠীতে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াতে পারে ৮ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট।
২০১৯ সালের পুজোয় ষষ্ঠীতে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৭ হাজার ৭৯৩ মেগাওয়াট। গতবছর তা কমে হয় ৭ হাজার ২০৫ মোগাওয়াট। তাহলে এবার এতটা চাহিদা বাড়তে চলেছে কেন? অরূপবাবু বলেন, প্রথমত, আমাদের গ্রাহক সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। এর পাশাপাশি বারোয়ারি পুজো ও বাড়ির পুজোর সংখ্যাও বেড়েছে। তাছাড়া শিল্প ও কারখানায় বিদ্যুত চাহিদা বেড়েছে। যেহেতু ষষ্ঠীতেও বেশিরভাগ কলকারখানা চালু থাকে, তাই সব মিলিয়ে আমরা মনে করছি ষষ্ঠীতে বিদ্যুতের চাহিদা শিখর ছোঁবে। এর পাশাপাশি আবহাওয়ার পূর্বাভাসকেও বিদ্যুতের চাহিদার হিসেবে রাখা হয়েছে। দপ্তরের হিসেব, যেখানে ২০১৯ সালে তাদের গ্রাহক সংখ্যা রাজ্যে ছিল ১ কোটি ৯৭ লক্ষ, সেখানে এখন তা ২ কোটি ৮ লক্ষ।
পুজোর বাদবাকি দিন বিদ্যুতের চাহিদা কত হতে পারে, তারও একটা ধারণা দিয়েছে দপ্তর। তৃতীয়ায় ৮৮১০, চতুর্থীতে ৮৮৩০, পঞ্চমীতে ৮৩৮০, সপ্তমীতে ৮৪৫০, অষ্টমীতে ৮০৩০, নবমীতে ৭৭০০ এবং দশমীতে ৭৩৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা থাকতে পারে।
দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, ওই চাহিদার জোগান দিতে তাঁদের বাইরে থেকে বিদ্যুৎ কিনতে হবে না। সবটাই এখানে উৎপাদন হবে। এমনকী কয়লার জোগানে ঘাটতি হবে না বলেই আশাবাদী তাঁরা। দপ্তরের হাতে যে ছ’টি কয়লা খনি আছে, তার পাঁচটিতে কয়লা উৎপাদন হচ্ছে, যা রাজ্যের বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কয়লার ৬০ শতাংশ জোগান দেয়। ফলে কোল ইন্ডিয়ার মতো সংস্থার উপর যে বাকি ৪০ শতাংশের জন্য নির্ভর করতে হবে, তাতে জোগানে অসুবিধা হবে না বলেই আত্মবিশ্বাসী দপ্তরের কর্তারা।
এদিন বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, আমরা পুজোয় বিদ্যুৎ পরিষেবা সুষ্ঠুভাবে দিতে লাইন, সাবস্টেশন ও কারখানার যে যে মেরামতির দরকার, তা চালিয়ে যাচ্ছি। সেই কাজ ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সিইএসসি এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আওতায় মোট ২ হাজার ৩১৯টি মোবাইল ভ্যান পুজোর দিনগুলিতে চালু থাকবে। বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কোনও সমস্যায় তারা পরিষেবা দেবে। চালু করা হবে হেল্পলাইন, যা পুজোয় দিন-রাত পরিষেবা দেবে।