মোদী সরকারকে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’র সঙ্গে তুলনা বিরোধীদের
মোদী সরকারকে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’র সঙ্গে তুলনা করেছে বিরোধীরা। যেভাবে সরকারি সম্পত্তিকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে সেটা নতুন করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কথাই মনে করাচ্ছে বলে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছেন। দেশ বিক্রি নিয়ে তাঁর আরও বক্তব্য, এই ভারত লুট ঠেকাতে আমাদের প্রাণপণে বাধা দিতে হবে। বিরোধীরা তো বটেই, বিজেপির অন্দরেও পাঁচ রাজ্যের ভোটের আগে এভাবে ঢালাও বেসরকারিকরণ নিয়ে ক্ষোভ ও প্রশ্নের সঞ্চার হয়েছে। বিশেষ করে যে রাজ্যগুলিতে আগামী বছর বিধানসভা ভোট, সেখানে বিজেপি বিরোধী দল এই ন্যাশনাল মনিটাইটাইজেশন পাইপলাইন প্রকল্প নিয়ে এখন থেকেই রাস্তায় নামার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে।
বস্তুত সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মোদী সরকার আয়ের পথ খুলে রাজকোষ সামাল দেওয়ার মরিয়া প্রয়াসে নামছে। আর এই উদ্যোগ যাতে ক্ষতিকর না হয়ে দাঁড়ায়, আশঙ্কা শুরু হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে। বিজেপি দলীয়ভাবে যে অস্বস্তিতে পড়ছে সেটা বুঝতে পেরে বিরোধী দলগুলি এবার ঝাঁপিয়ে পড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে এই ইস্যুতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বাগ্রে প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেছেন, সরকারি সংস্থার মালিক বিজেপি নয় যে, যখন ইচ্ছে যা ইচ্ছে বিক্রি করে দেওয়া হবে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ৭০ বছর ধরে কংগ্রেস কিছুই করেনি বলে নরেন্দ্র মোদী ক্রমাগত প্রচারে বলে থাকেন। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, ৭০ বছরে কংগ্রেস সরকার ঠিক যে সরকারি সম্পদগুলি নির্মাণ করেছিল, বিজেপি সাত বছরের মধ্যেই সেগুলি বিক্রি করে দেওয়ার তালিকা করে ফেলেছে।
বৃহস্পতিবার যুব কংগ্রেস মুম্বইয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে সরকারি সম্পদ বিক্রির বিরুদ্ধে। এই আন্দোলন চলবে বলেই জানিয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বলেছেন, দেশের স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে সরকারি সংস্থাকে কর্পোরেটের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে। এভাবে আসলে এনডিএ পরিকল্পনা নিয়েছে সরকারি চাকরি কমিয়ে আনার।
আর তার পাশাপাশি যাতে বেসরকারি সংস্থায় যাতে সংরক্ষণ না থাকে। এই পরিকল্পিত লুটের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও বিক্ষোভ দেখিয়ে রাস্তায় নামা হবে। বুধবারই অখিলেশ যাদব উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে এই বেসরকারিকরণ ইস্যু হবে বলে আভাস দিয়েছেন। সমাজবাদী পার্টি সরকারের সম্পদকে এভাবে অবাধে বেসরকারি হাতে দিয়ে দেওয়া নীতিগতভাবে বিরোধী। উত্তরপ্রদেশে এরকম উদ্যোগ নেওয়া হলে সর্বশক্তি দিয়ে বাধা দেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। শিবসেনা বলেছে, সরকারি সম্পদ ভারতের গর্ব ও শক্তি। যেভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি সময়ে অসময়ে ভারতের সহায়তা করে চলেছে, সেটা সাধুবাদযোগ্য। সরকারি সংস্থাকে আরও শক্তিশালী করার পরিবর্তে বিক্রি করার প্রয়াস মোদী সরকারের দূরদৃষ্টির অভাবকেই প্রমাণ করে।