দেশ বিভাগে ফিরে যান

“আরোগ্য সেতু অ্যাপে তথ্য চুরি যায় না”: হ্যাকারের সতর্কবার্তা উড়িয়ে দিয়ে জানাল কেন্দ্র

May 6, 2020 | 2 min read

করোনা ভাইরাস ট্র্যাকিং অ্যাপ আরোগ্য সেতুতে (Aarogya Setu) কোনও সুরক্ষা লঙ্ঘনজনিত সমস্যা নেই! মঙ্গলবার কেন্দ্র সরকার একজন ফরাসি ‘হোয়াইট ক্যাপ’ বা এথিক্যাল হ্যাকারের দাবির পালটা জবাবে এমনুটাই জানিয়েছে। ওই হ্যাকার মঙ্গলবার বলেছিলেন যে “৯০ মিলিয়ন ভারতীয়র গোপন তথ্য ঝুঁকির মুখে।” বুধবার সকালে প্রকাশিত একটি বিশদ বিবৃতিতে সরকার জানিয়েছে, “কোনও তথ্য বা সুরক্ষা লঙ্ঘন হয়নি” এবং “এই এথিক্যাল হ্যাকারও কোনও ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ঝুঁকির মুখে কিনা তার পক্ষে প্রমাণ দেননি।” উদ্বিগ্ন ওই হ্যাকার পরিচিত পয়েন্ট থেকে থেকে ত্রিভুজ গঠন করে একটি অজানা বিষয় চিহ্নিতকরণের দিকটি উল্লেখ করে সরকারকে পালটা জিজ্ঞাসা করেন, “ট্রায়াঙ্গুলেশন কী তা কি আপনি জানেন?” কয়েক ঘন্টা আগেই সরকারের প্রতিক্রিয়া দেখে ওই হ্যাকার বলেছিলেন: “মূলত, আপনারা বলছেন, ‘এখানে দেখার মতো কিছুই নেই’। আমরা দেখব। আমি আগামীকাল আপনার কাছে আবার ফিরে আসব।”

এলিয়ট অলডারসন নামের ওই হ্যাকার এর আগে আধার অ্যাপ্লিকেশনটির ত্রুটিগুলি প্রকাশ করেছিলেন। তিনি মঙ্গলবার ‘সুরক্ষা ইস্যু’ সম্পর্কে সতর্ক করে একাধিক টুইট পোস্ট করেন। এলিয়ট অলডারসন লেখেন: “পুনশ্চ: রাহুল গান্ধি ঠিকই ছিলেন।” কংগ্রেস সাংসদকে নিজের টুইটে ট্যাগও করেছিলেন তিনি।

হ্যাকার টুইট করেন, “হাই আরোগ্য সেতু, আপনার অ্যাপ্লিকেশনটিতে একটি সুরক্ষা সমস্যা পাওয়া গিয়েছে। ৯০ মিলিয়ন ভারতীয়ের গোপন তথ্য ঝুঁকির মুখে। আপনি কি আমার সঙ্গে আলাদা করে যোগাযোগ করতে পারবেন?”

এক ঘণ্টার মধ্যেই ওই হ্যাকার জানান যে ভারত সরকার যোগাযোগ করেছে; ভারতীয় কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম এবং জাতীয় তথ্য বিজ্ঞান কেন্দ্র তার সঙ্গে যোগাযোগ করে।

এরপরেই ওই হ্যাকার সরকারকে হুঁশিয়ারি দেন যে, যদি এই সমস্যা ঠিক না করা হয় তবে তিনি ত্রুটিগুলি জনসমক্ষে প্রকাশ করবেন। হ্যাকার লেখেন: “৯০ মিলিয়ন ভারতীয়র মেডিকেল তথ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া কোনও বিকল্প নয়। আমার ধৈর্য খুব সীমিত, তাই যুক্তিসঙ্গত সময়সীমার পেরোলেই আমি এটি প্রকাশ্যে নিয়ে আসব।”

রাহুল গান্ধি এই সপ্তাহেই আরোগ্য সেতু অ্যাপ্লিকেশনটির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন। সরকার বলেছে যে করোনাভাইরাস হটস্পটগুলি ট্র্যাক করতে ফোন থেকে লোকেশন ডেটা ব্যবহার করে এই অ্যাপ। রাহুল গান্ধি বলেন, “এটি একটি ‘পরিশীলিত নজরদারি সিস্টেম’ মাত্র।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সমালোচনার জবাবে এই অ্যাপটিকে “শক্তিশালী সঙ্গী, যা মানুষকে সুরক্ষা দেয়” বলেই অভিহিত করেন।

“প্রতিদিন একটা নতুন মিথ্যা কথা। আরোগ্য সেতু এক শক্তিশালী সঙ্গী যা মানুষকে রক্ষা করে। এই অ্যাপের একটি শক্তিশালী ডেটা সুরক্ষা আর্কিটেকচার রয়েছে। যারা সারা জীবন নজরদারি চালিয়েছেন, তারা জানেন না কীভাবে প্রযুক্তির কল্যাণ লাভ করা যায়!” টুইট করেন রবিশঙ্কর প্রসাদ।

কেন্দ্র সরকার আরোগ্য সেতু অ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি করেছে, যার ব্যাপক প্রচার করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা, সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের সকল কর্মচারীর জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এই অ্যাপ।

কোভিড-১৯ কনটেইনমেন্ট জোনের প্রত্যেককেও এই অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। আজ থেকে শুরু হচ্ছে বিশেষ বিমানের মাধ্যমে বিদেশে আটকে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনা, তাঁদেরও এই অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। বাড়ি থেকে যারা কাজ করছেন তাদের অবশ্য অ্যাপটি ব্যবহার করার দরকার নেই। কেন্দ্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ৩০ কোটি অ্যাপ ডাউনলোডের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গিয়েছে ১,৬৯৪ জন মানুষের এবং দেশে এখনও পর্যন্ত ৪৯,৩৯১ টি কোভিড-১৯ পজিটিভ কেস পাওয়া গিয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#central government, #Arogya setu app

আরো দেখুন