দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে পুলিশে অভিযোগের জের, আত্মসমর্পণ করলেন বিজেপি বিধায়ক
বাঁকুড়া জেলা আদালতে বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণ করলেন শাড়তোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি। চন্দনা এবং তাঁর গাড়ির চালক কৃষ্ণ কুণ্ডুর বিয়ের কথা ১৯ অগস্ট প্রকাশ্যে আসে। এর পরই কৃষ্ণের স্ত্রী রুম্পা কুণ্ডু চন্দনার বিরুদ্ধে গঙ্গাজলঘাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই মামলাতেই আত্মসমর্পণ চন্দনার।
লিখিত অভিযোগে রুম্পা জানিয়েছিলেন, দলের কাজ নিয়ে চন্দনার সঙ্গে থাকত কৃষ্ণ। তার জেরে প্রেমের সম্পর্ক হয় এবং গোপনে বিয়ে করেছে তাঁরা। চন্দনা এবং নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক অভিযোগ আনেন রুম্পা। সে অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বিজেপি বিধায়ক এবং কৃষ্ণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮-এ(বধূ নির্যাতন), ৪৯৪ (বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক), ৪০৬ (বিশ্বাসভঙ্গ) এবং ৫০৬ (হুমকি দেওয়া) নম্বর ধারায় মামলা রুজু করে। এই মামলাতেই আত্মসমর্পণ বিধায়কের।
চন্দনা আত্মসমর্পণ করতেই আদালতে হাজির হন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নিলাদ্রী শেখর দানা। তিনি বলেন, ‘‘এক জন দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া শ্রেণির গৃহবধূ বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এটা মেনে নিতে পারছে না অন্যান্য রাজনৈতিক দল। তাই তাঁর বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার করা হয়েছে। কৃষ্ণ কুণ্ডুর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ চন্দনা অবশ্য আদালতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেননি। চন্দনার আইনজীবী লোকেশ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘রুম্পা কুণ্ডু চন্দনা বাউড়ি এবং কৃষ্ণ কুণ্ডুর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছিলেন, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ চন্দনাকে নোটিস দিয়েছিল। সেই নোটিসের প্রেক্ষিতেই চন্দনা বৃহস্পতিবার আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। দুপুরে তাঁকে আদালতের পুলিশ ফাইলে তোলা হবে।’’
গত ১৯ আগষ্ট ভোরে নিজের গাড়ির চালক কৃষ্ণকে নিয়ে চন্দনা হাজির হন বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানায়। এ বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় রটে যায়, কৃষ্ণকে গোপনে বিয়ে করেছেন শালতোড়ার বিধায়ক। যদিও চন্দনা বাড়িতে ফিরে নেটমাধ্যমে লাইভে এসে জানান, বিয়ের ঘটনা ঘটেনি। পারিবারিক একটি সমস্যা নিয়ে তিনি থানায় গিয়েছিলেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছে।’’ এর পরই কৃষ্ণের স্ত্রী থানায়গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে রুম্পা কুন্ডু দাবি, ‘বিধানসভা ভোটের আগে থেকে আমার স্বামী কৃষ্ণ কুন্ডু দলের কাজে চন্দনা বাউড়ির সঙ্গে থাকতেন। চন্দনা বাউড়ি ভোটে জিতে বিধায়ক হওয়ার পর প্রভাব খাটিয়ে আমার স্বামীর সঙ্গে প্রতারণা করেন এবং তাঁর সঙ্গে সব সময় থাকতে বাধ্য করেন। প্রতিবাদ জানাতে গেলে আমার স্বামী আমার উপর শারিরীক নির্যাতন করেন। ১৯ অগষ্ট ভোরে চন্দনার ভাই আমাকে ফোন করে জানায় চন্দনা বাউড়ি এবং আমার স্বামী বিয়ে করেছে’।