রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

এবার সুন্দরবনে চালু হচ্ছে ‘চৌকাঠে ডাক্তার’ কর্মসূচি

September 3, 2021 | 2 min read

 উদ্দেশ্য, একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। আর সেই লক্ষ্যেই বণিকসভা ফিকির (ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি) নজরদারিতে রাজ্যে শুরু হচ্ছে ‘উদয়:চৌকাঠে ডাক্তার’ কর্মসূচি। অর্থাৎ, ডক্টর অ্যাট ইয়োর ডোরস্টেপ। যাবতীয় চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপে পৌঁছবেন স্থানীয় প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীরা। অন্যদিকে, ডিজিটাল মাধ্যমে পুরো বিষয়টার তত্ত্বাবধান করবেন অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা। জানা যাচ্ছে, এক্ষেত্রে কার্যত পাইলট প্রজেক্ট হিসেবেই বেছে নেওয়া হয়েছে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত কয়েকটি দ্বীপকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কচুখালি, ছোট মোল্লাখালি, কুমিরমারি, সাতজেলিয়া, চণ্ডীপুর, আমতলি, গোসাবা, মইপিঠ দ্বীপ। উল্লিখিত কর্মসূচির অগ্রগতি কীভাবে হচ্ছে এবং কতটা হচ্ছে, নিয়মিত তার রিপোর্ট জমা পড়বে নয়াদিল্লিতে ফিকির কার্যালয়ে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই এই পরিষেবা শুরু হওয়ার কথা।


জানা গিয়েছে, একটি নথিভুক্ত বেসরকারি সংগঠন ‘ফাউন্ডেশন ফর ইনোভেশনস ইন হেলথ’ সম্প্রতি ফিকি আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট অনুদান জিতে নেয়। তারই ভিত্তিতে চৌকাঠে ডাক্তার কর্মসূচি শুরু করতে চলেছে তারা। বণিকসভা ফিকির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘২০১২ সাল থেকেই সামাজিকস্তরের বিভিন্ন কাজের জন্য তারা অনুদানের ব্যবস্থা করছে। যাতে সমাজের একেবারে গরিব মানুষের উন্নতির জন্য পদক্ষেপ করা যায়।’ ফিকি জানিয়েছে, ‘সেইমতোই পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে চৌকাঠে ডাক্তার কর্মসূচির পৃষ্ঠপোষকতা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা সংগঠনকে ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।’ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ শতদল সাহা বলেন, ‘রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করেই যাবতীয় কাজ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমরা রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে গোটা বিষয়টি জানিয়েছি। তাছাড়া স্থানীয় যেসব স্বাস্থ্যকর্মী এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছেন, তাঁদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরই প্রকল্পের মাধ্যমে।’


কীভাবে কাজ করবে ‘চৌকাঠে ডাক্তার’? জানা যাচ্ছে, এক্ষেত্রে মোটরচালিত লঞ্চকে ই-হেলথ ক্লিনিকে পরিণত করা হচ্ছে। চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য সেইসব লঞ্চই পৌঁছে যাবে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপে। সঙ্গে থাকবেন স্থানীয় প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে শতদলবাবু স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মীরা চিকিৎসা করবেন, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। প্রত্যন্ত সেইসব দ্বীপের বাসিন্দারা চিকিৎসা পাবেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবুদের কাছ থেকেই। প্রযুক্তির সাহায্যে ডিজিটাল মাধ্যমে তা সম্ভব করা হবে।’ এক্ষেত্রে কোনও শারীরিক সমস্যা নিয়ে ই-হেলথ ক্লিনিকে গেলে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মী নির্দিষ্ট ‘অ্যাপ’-এ তথ্য নথিভুক্ত করবেন। প্রযুক্তির সাহায্যে তা মুহূর্তে পৌঁছে যাবে অন্যত্র বসে থাকা চিকিৎসকের কাছে। সমস্যা জেনে চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগীর সঙ্গে কথা বলবেন। দেবেন প্রেসক্রিপশন। সেইমতো রোগীকে সবিস্তার বুঝিয়ে দেবেন স্বাস্থ্যকর্মী। ব্যবস্থা করবেন ওষুধেরও। ডিজিটাল মাধ্যমে তত্ত্বাবধানে যুক্ত থাকবেন জেনারেল ফিজিসিয়ান, কার্ডিওলজিস্ট, ডায়েবেটোলজিস্ট, ডার্মাটোলজিস্টরা।  শতদলবাবু বলেন, ‘মাসে অন্তত একবার যাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সরাসরি প্রত্যন্ত দ্বীপগুলিতে যান, তার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।’ এই কর্মসূচিতে প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে ইউএসএর জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটি, গুয়াহাটি ও খড়্গপুর আইআইটি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#sundarban

আরো দেখুন