নিউটাউনের সাবওয়েতে ধরা দিল এক টুকরো কলকাতা, খুশি আমজনতা
পাতালপুরীর একশো গজেই গোটা কলকাতা। সাবেক শহর থেকে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগা মহানগর ছবির কোলাজে ধরা দিচ্ছে পাতালপথে। নিউটাউনের বিশ্ববাংলা গেটকে ঘিরে তৈরি হয়েছে সাবওয়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে ও পথচারীদের সুরক্ষার খাতিরে রবীন্দ্রতীর্থের চারমাথার মোড়ে এই সাবওয়ে তৈরি করেছে হিডকো। তবে এটি শুধু পথচলতি মানুষের এপার-ওপারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে দর্শনার্থীদেরও। মাটির তলা দিয়ে রাস্তার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যেতে যেতেই দেখা হয়ে যাবে গোটা কলকাতাকে। দেওয়াল জুড়ে রয়েছে শহরের বিভিন্ন নিদর্শনের আঁকা ছবি। রয়েছে নস্টালজিয়ার ছোঁয়া।
পাতালপথটি শহরের অন্যান্য সাবওয়ের থেকে অনেকটাই আলাদা। প্রায় ১০০ গজ লম্বা এই সাবওয়ের একপাশের দেওয়াল জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন ছবির কোলাজ। রয়েছে গঙ্গার ঘাট, হাওড়া ব্রিজ, কালীঘাট, বেলুড় মঠ, দ্বিতীয় হুগলি সেতু, ভিক্টোরিয়া ইত্যাদি। শুধু তাই নয়, মাটির নীচে এই পথে তিলোত্তমার নস্টালজিয়ার স্বাদও পাবে আমজনতা। সেখানে থাকছে ময়দানে সবুজ মখমলের উপর ফুটবল খেলার চিরাচরিত দৃশ্য, প্রিন্সেপ ঘাটের সেই জমাটি আড্ডা, শ্যামবাজারে পাঁচমাথার মোড়ের ব্যস্ততা ইত্যাদি। ঐতিহ্যের পাশাপাশি শহরে নয়া আকর্ষণের স্থানগুলিও ঠাঁই পেয়েছে দেওয়াল চিত্রে। সেখানে রয়েছে নিউটাউন কফি হাউস, বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টার, বিশ্ব বাংলা গেট ইত্যাদি। একইসঙ্গে, অ্যাপ নির্ভর ক্যাব-বাইকের যুগেও হলুদ ট্যাক্সি ও ট্রামের ছবি উস্কে দেবে পুরনো দিনে স্মৃতি। আপাতত তিনটি প্রবেশপথের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি পথের মুখেই বসানো হয়েছে দু’টি করে চলমান সিঁড়ি। পাশাপাশি রয়েছে সাধারণ সিঁড়িও। সাবওয়ের যেদিকের দেওয়াল জুড়ে ছবি, তার উল্টোদিকের দেওয়ালে বসেছে এলইডি লাগানো বোর্ড।
নিউটাউনের এই মোড়ে এসে মিশেছে চারটি রাস্তা। প্রতিটি রাস্তার পাশেই রয়েছে আলাদা আলাদা সার্ভিস রোড। ফলে রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে হলে সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। এই রাস্তাগুলিতে গাড়ির গতি সাধারণত বেশি থাকে। সিগন্যাল লাল হলে তবেই মেলে পারাপারের সুযোগ। তবে সেই সুযোগ ক্ষণস্থায়ী। প্রবীণ বা অসুস্থদের পক্ষে ওই ক্ষণিক সময়ে রাস্তা পার হওয়া সব সময় সম্ভব হয় না। এই সমস্যা দূর করতেই হিডকো ও বিধাননগর পুলিস কর্তৃপক্ষ বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়, বিশ্ব বাংলা গেটকে ঘিরে সাবওয়ে তৈরি করার। ইতিমধ্যেই সেই কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন চলছে শেষ পর্যায়ের তুলির টান। সেপ্টেম্বরের গোড়াতেই এই সাবওয়ে উদ্বোধন হওয়ার কথা, বলছে হিডকো কর্তৃপক্ষ।