১২টা ইএসআই হাসপাতালেই নেই ফায়ার লাইসেন্স
১৩টার মধ্যে ১২টা হাসপাতালেই নেই ফায়ার লাইসেন্স! এই হাল রাজ্যের ইএসআই (ESI) হাসপাতালগুলির। মানিকতলা ইএসআই হাসপাতাল ছাড়া বাকি ১২টা ইএসআই হাসপাতালের একটিরও ফায়ার লাইসেন্স (Fire License) নেই। এমনকী, নিয়ম মেনে আদর্শ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থারও বালাই নেই। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের সময় এই ১২টি হাসপাতালের মধ্যে উলুবেড়িয়া, বালটিকুরি এবং ব্যান্ডেল হাসপাতালকে পুরোদস্তুর কোভিড হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছিল। তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য এখন ১৩টি হাসপাতালেই কমবেশি ৫০টি শয্যার কোভিড ওয়ার্ড রয়েছে। তাছাড়াও যেকোনও কাজের দিনে এই হাসপাতালগুলি মিলিয়ে কমবেশি দু’হাজার রোগী এবং সমসংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী থাকেন। গত ২৩ এপ্রিল নাসিকের হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের পরও হুঁশ ফেরেনি। প্রসঙ্গত, নাসিকের অগ্নিকাণ্ডে ১৩ টি তরতাজা প্রাণ চলে যায়।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই ফায়ার লাইসেন্স বা ফায়ার ফাইটিংয়ের যাবতীয় ব্যবস্থা করার কথা শ্রমমন্ত্রকের অধীন ইএসআই কর্পোরেশনের। শুধু গত দু’বছরেই রাজ্যের তরফে কর্পোরেশনের বিভিন্ন কর্তা এমনকী ইএসআইসি’র ডিরেক্টর জেনারেলকেও পাঠানো হয়েছে চিঠি। কখনও আর্জির সুর, কখনও উদ্বেগের, কখনও আবার সতর্কতা। অভিযোগ, ইএসআইসি’র হুঁশ ফেরেনি তাতেও।এখনও মানিকতলা বাদে শিয়ালদহ, বালটিকুরি, বজবজ, কল্যাণী, উলুবেড়িয়া, শ্রীরামপুর, গৌরহাটি, ব্যান্ডেল, দুর্গাপুর, আসানসোল, বেলুড় এবং কামারহাটি—এই ১২টিরই কোনও অগ্নিনির্বাপণ লাইসেন্সই নেই।
এ বিষয়ে ইএসআই অধিকর্তা তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি আমাদের নয়, কর্পোরেশনের এক্তিয়ারভুক্ত। আমরা ওদের একাধিকবার জানিয়েছি। ওরা কনসালটেন্ট নিয়োগ করেছে বলে শুনেছি। আশা করছি, এবার নিশ্চয়ই হবে। বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। ইএসআই কর্পোরেশনের আঞ্চলিক অধিকর্তা অক্ষয় কালা বলেন, কোনও মন্তব্য করব না। এটুকু বলতে পারি কাজ এগচ্ছে এবং হবে।
সরকারি সূত্রের খবর, সরকারি চিঠিতে কেন্দ্রীয় কর্তাদের পাঠানো চিঠিতে কখনও রাজ্যের কর্তারা এই ইস্যুতে নিজেদের ‘ডিপ কনসার্ন’ বা ‘গভীর উদ্বেগ’-এর কথা জানিয়েছেন। যাতে পাহাড় নড়ে তাই কখনও বলেছেন, ‘সবসময় ভাগ্য আমাদের সঙ্গী নাও হতে পারে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন।’ ই-মেল, চিঠি, ইএসআই রিজিওনাল বোর্ডের বৈঠক—কোথায় না বলা হয়েছে। ১৬ জুন কর্পোরেশনে চিঠি পাঠিয়েছিলেন আগের শ্রমসচিব সৈয়দ আহমেদ বাবা এবং বর্তমান অধিকর্তা তন্ময় চক্রবর্তী। রিজিওনাল বোর্ডের একাধিক বৈঠকে শ্রমমন্ত্রী, সচিব, কর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়সূচির মধ্যে জায়গা করে নিয়েছিল অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। তাতেও নিট ফল এখনও সন্তোষজনক নয়। সরকারি সূত্রের খবর, ২৪ জুনের এক চিঠিতে ১২টি ইএসআই হাসপাতাল, দুটি নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কর্পোরেশনের আঞ্চলিক অফিস এবং ১৫টি কর্মী আবাসনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা করার জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগ করার কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু এখনও তার হাতেগরম ফল পাননি রোগীরা
কিংবা কর্মীরা।