করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ভ্রুকুটি, ১৫ই সেপ্টেম্বর উত্তরের জঙ্গল খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা
ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ীদের কাতর অনুরোধ, কোভিড-১৯’র যাবতীয় বিধি মেনে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে সর্বসাধারণের জন্য জঙ্গল খুলে যাক। তা না হলে পুজোর আগে তাঁদের সমস্ত বুকিং বাতিল হয়ে যাবে। পর্যটন ব্যবসায়ীদের মতো খোদ বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও চাইছেন ১৫ তারিখ হাতিপুজো করে জঙ্গল খুলুক। নির্দিষ্ট সময়ে জঙ্গল খোলার আর্জি নিয়ে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম নেটওয়ার্ক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কিন্তু, নির্দিষ্ট দিনে জঙ্গলের দরজা খুলবে কিনা, কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কায় তা নিয়ে যথেষ্ট দোলাচল তৈরি হয়েছে। কারণ এখনও জঙ্গল খোলার সরকারি নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, জঙ্গল খুলবে কিনা, তা পুরোটাই নির্ভর করছে রাজ্য সরকারের উপর। জঙ্গল খোলার জন্য রাজ্যের এখনও কোনও অনুমতি মেলেনি। করোনার উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে জঙ্গল খোলার কোনও এক্তিয়ার নেই বনদপ্তরের।
বনমন্ত্রী আরও বলেন, তবে দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে আমিও চাই জঙ্গল খুলুক। ভ্রমণ পিপাসুরা দীর্ঘদিনের দমবন্ধ পরিবেশ থেকে বেরিয়ে কিছু সময়ের জন্য মুক্ত শ্বাস নিক। সবটাই নির্ভর করছে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকার উপর। আমরা দু’দিন সময় পেলেও সবকিছু ঠিকঠাক করে জঙ্গল খুলে দিতে পারব।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, পুজোর আগে জঙ্গল না খুললে পর্যটন ব্যবসায় আরও গভীর সঙ্কট তৈরি হবে। জঙ্গল খোলার জন্য আমরা সংগঠনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেব। বন্যপ্রাণীর প্রজননের জন্য প্রতি বছর ১৫ জুন থেকে তিনমাসের জন্য জঙ্গল বন্ধ রাখা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর হাতিপুজা করে পরের দিন ১৬ তারিখ সকলের জন্য জঙ্গল খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু, করোনার কোপে টানা দেড়বছর ধরে জঙ্গল এমনিতেই বন্ধ রাখা হয়েছে।
সাপ্তাহিক ছুটিতে কিছু পর্যটক বেড়াতে এলেও তাঁরা জঙ্গলের সংরক্ষিত এলাকা এড়িয়ে বাইরের হোটেলগুলিতে রাত কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে, করোনার জন্য হাতিসাফারি বন্ধ রাখা হলেও যাবতীয় বিধি মেনে চালু রাখা হয়েছে কার সাফারি। সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল ভিস্তাডোম কোচে ট্যুরিস্ট স্পেশাল চালু করায় ডুয়ার্সে হু হু করে হোটেল, হোম স্টে’র বুকিং বাড়ছে। এই অবস্থায় পুজোর আগে জঙ্গল খুললে সেই বুকিং এক ধাক্কায় আরও বেড়ে যাবে বলে হোম স্টে, রিসর্ট ও লজ মালিকরা।