রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

আলোর উপর গবেষণা করে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন কল্যাণীর বিজ্ঞানী

September 9, 2021 | 2 min read

মেরুকৃত আলোর উপর গবেষণা করে এবছর আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন কল্যাণীর বিজ্ঞানী অধ্যাপক নির্মাল্য ঘোষ। পদার্থের মধ্যে এমন কিছু সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পরিবর্তন ঘটে, যা মাইক্রোস্কোপে ধরা পড়ে না। এবার মেরুকৃত আলোর এই বিশেষ ধর্মকে কাজে লাগিয়ে পদার্থের সেই সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পরিবর্তন ধরা সম্ভব হবে বলে বিজ্ঞানীর দাবি। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে এই আবিষ্কার।

মেরুকৃত আলো কী? কল্যাণীর মোহনপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইআইএসইআর) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নির্মাল্যবাবু বলেন, আলো একটি তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ। তাই সে ধরনের যে কোনও তরঙ্গের মতো সেটারও কিছু অংশের মেরুকরণ হয়। ল্যাবরেটরিতে বিশেষ পদ্ধতিতে মেরুকৃত আলো তৈরি করা সম্ভব। আমাদের কাজ হল, সেই মেরুকৃত আলোর মাধ্যমে পদার্থের সূক্ষাতিসূক্ষ পরিবর্তন বোঝা যা মাইক্রোস্কোপের পক্ষেও ধরা অসম্ভব। এর জন্য আমরা বেশ কিছু যন্ত্রও তৈরি করেছি।নির্মাল্য ঘোষ প্রথম ভারতীয় পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি মেরুকৃত আলোর উপর গবেষণা করে এবছর আন্তর্জাতিক জর্জ গ্যাব্রিয়েল স্টোকস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর অপটিকস অ্যান্ড ফোটোনিক্স প্রতি বছর সারা বিশ্ব থেকে একজন করে বিজ্ঞানীকে বিশেষ অবদানের জন্য এই পুরস্কারে ভূষিত করে। আলোর বিষয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে বিশ্বের এই কনফারেন্সের আয়োজন করে এই সোসাইটি।

সম্প্রতি সেই কনফারেন্সে উপস্থিত থেকে তাঁর এই পুরস্কার নেওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতে তিনি সেখানে যেতে পারেননি। তবে তিনি যে ভিডিওবার্তা পাঠিয়েছেন, তা ওই অনুষ্ঠানে দেখানো হয়। বলা যেতেই পারে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনে থাকা কল্যাণীর এই প্রতিষ্ঠানের মুকুটে নিঃসন্দেহে আরও একটি পালক যুক্ত করলেন এই অধ্যাপক। তিনি বিগত ১০-১২ বছর ধরে বায়োঅপটিক অ্যান্ড ন্যানোফোটোনিক্স ল্যাবরেটরিতে মেরুকৃত আলোর উপর কাজ করছেন।

নির্মাল্যবাবু বলেন, এই পুরস্কার শুধু আমার একার প্রাপ্য নয়। আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন পিএইচডি ছাত্রেরও এই পুরস্কার পাওয়ার পিছনে অবদান রয়েছে। এখন সারা বিশ্বে ছোট ডিভাইসের চাহিদা রয়েছে। সেটাকে মাথায় রেখেই ন্যানো মিটার দৈর্ঘ্যের মধ্যে আলোকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে মেরুকৃত আলোর এই তত্ত্ব ব্যবহার করা হয়েছে। আলোক নিয়ন্ত্রিত ন্যানো স্কেল ডিভাইস নির্মাণের ক্ষেত্রে এই তত্ত্ব কাজে আসবে বলে দাবি করেছেন তিনি। এছাড়াও মেরুকৃত আলোর এই বিশেষ তত্ত্ব প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে সহায়তা করবে।

বিজ্ঞানী জানান, অনেক সময় রোগী খারাপ অবস্থায় পৌঁছে গেলে আল্ট্রাসাউন্ড, এমআরআই-এর মতো যন্ত্রে সেই রোগ ধরা পড়ে। কিন্তু এই বিশেষ তত্ত্ব ব্যবহার করে একদম প্রাথমিক পর্যায়ে রোগকে চিহ্নিত করা সম্ভব। দেহে অতি সূক্ষ্ম পরিবর্তন হলেও তা ধরা পড়বে এতে। তবে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এর ব্যবহারের পুরো বিষয়টি এখন গবেষণা স্তরেই রয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Light, #International Award, #Nirmalya Ghosh

আরো দেখুন