জিএসটির বকেয়া টাকা দিচ্ছে না বিজেপি সরকার, বৈঠকে সংঘাতের আশঙ্কা
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী দেশের ১৭টি রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্ব ঘাটতির ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রদান করার কথা ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। ২০২১-২২ আর্থিক বছরের জন্য এই অঙ্ক। এখনও পর্যন্ত বিগত পাঁচ মাসে দেওয়া হয়েছে ৫৯ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার এই রাজস্ব ঘাটতির আরও এক কিস্তি ক্ষতিপূরণের অর্থ রাজ্যগুলিকে দেওয়া হল। এদিন দেওয়া হয়েছে ৯৮৭১ কোটি টাকা। ১৭ টি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছে ১৪৬৭ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরে এ পর্যন্ত রাজ্য পেয়েছে ৮৮০৩ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে এই কিস্তির টাকা মেটালেও রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের বকেয়া টাকা নিয়ে প্রবল বিরোধের সম্ভাবনা আসন্ন জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে।
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর লখনউতে হবে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক। সেই বৈঠকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ এবং কোভিড সংক্রান্ত চিকিৎসার জরুরি উপকরণ, ওষুধের জিএসটি কমানো নিয়ে টানাপোড়েন হবে বলে জানা যাচ্ছে। ওই বৈঠকের আগেই বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলি আগামী সপ্তাহেই নিজেদের মধ্যে একটি পৃথক বৈঠক করে রণকৌশল স্থির করবে বলে জানা গিয়েছে। জানা যাচ্ছে, আসন্ন জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি একজোট হয়ে দাবি করতে চলেছে একটি নির্দিষ্ট ও স্থায়ী জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানোর ব্যবস্থা চালু করার জন্য। অর্থাৎ ৫ বছরের জন্য স্থায়ী একটি ব্যবস্থা চালু করা হোক।
বলা বাহুল্য, জিএসটি ক্ষতিপূরণ রাজ্যগুলিকে দেওয়া হবে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত। ২০১৭ সালে চালু হওয়া জিএসটি আইনের মধ্যেই রয়েছে এই ব্যবস্থার উল্লেখ। কিন্তু ২০২০ সালে শুরু হওয়া করোনার প্রাদুর্ভাব সব হিসেব উল্টে দিয়েছে। ফলে সবথেকে বেশি রাজস্ব ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে রাজ্যগুলি। এই কারণে এখন থেকেই আগামী ৫ বছরের জন্য পুনরায় ক্ষতিপূরণ সেস কীভাবে দেওয়া হবে তার রূপরেখা ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে রাজ্যগুলি। ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা রাজ্যগুলিকে সব মিলিয়ে জিএসটি ক্ষতিপুরণ দিতে হবে কোভিড সঙ্কটের পর। সেটি দিতে ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ করা হয়েছে। সেই টাকা মেটাতে হবে সেসের মাধ্যমেই।
একইসঙ্গে নতুন করে জিএসটি হার সংস্কারের দাবিও উঠেছে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে। তিনটি অথবা দু’টি মাত্র জিএসটি হার বজায় থাকুক, এটাই চাইছে সিংহভাগ বাণিজ্য গোষ্ঠী। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার আদৌ বর্তমান আর্থিক বছরে এরকম কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে রাজি কি না সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে।