আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই চালু হচ্ছে টালা ব্রিজ
জোরকদমে চলছে টালা ব্রিজ পুনর্নির্মাণ। ৬০ শতাংশের বেশি কাজ ইতিমধ্যেই শেষ। সব ঠিক থাকলে আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই চালু হয়ে যাবে টালা ব্রিজ। এমনই লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে নবান্ন। ব্রিজের চিৎপুরের দিকে র্যাম্পটি নামার ক্ষেত্রে অন্তরায় ছিল রেলের ৩৮টি স্টাফ কোয়ার্টার। অবশেষে সেগুলি সরানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এর জন্য তাদের ১১ কোটি টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে রেলের অংশে ব্রিজের গার্ডার বসানোর জন্য আবেদনও করা হয়েছে কমিশন অব রেলওয়ে সেফটির (সিআরএস) কাছে।
গত বছর করোনা-লকডাউনের মধ্যেই আগস্ট মাসে শুরু হয়েছিল টালা ব্রিজ পুনর্নির্মাণ। উত্তর কলকাতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওই সেতুটি তৈরির জন্য রাজ্যের কোষাগার থেকে খরচ করা হচ্ছে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা। তবে মাঝে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অক্সিজেনের চাহিদা তুঙ্গে ওঠায় থমকে যায় ওয়েল্ডিংয়ের কাজ। তার প্রভাব পড়ে গোটা প্রকল্পে। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে বর্তমানে দ্রুত কাজ শেষের লক্ষ্যে এগচ্ছে রাজ্য সরকার। ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে ৭৫ বছর পুরনো সেতুটির স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে আশঙ্কাজনক রিপোর্ট দেন প্রখ্যাত ব্রিজ বিশেষজ্ঞ ভি কে রায়না। সুপারিশ করেন টালা ব্রিজ পুরোপুরি ভেঙে ফেলার।
সেই প্রস্তাব মেনে সেতুটিকে নতুন করে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার জন্য জরুরি ছিল টালা ব্রিজের তলায় থাকা জল, কেবল, গ্যাসের পাইপলাইন সহ একাধিক পরিষেবার পরিকাঠামো সরানো। তা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় নির্মাণকারী সংস্থাকে। অতি সন্তর্পণে সেই সব পাইপলাইন বাঁচিয়ে কাজের জন্য খানিক দেরিও হয়। পূর্তসচিব হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সরেজমিনে টালা ব্রিজের কাজ পরিদর্শনে যান ওঙ্কার সিং মিনা। আলোচনায় বসেন দপ্তর এবং নির্মাণকারী সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে। খতিয়ে দেখেন কাজের অগ্রগতি। তারপরেই রেলের স্টাফ কোয়ার্টার ভাঙার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখেন তিনি।
এব্যাপারে সম্মতিও মেলে দ্রুত। তখন কোয়ার্টার সরানো জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় নবান্ন। কোয়ার্টারগুলি সরে গেলেই চিৎপুরের দিকে র্যাম্প নামার কাজ শুরু হবে। আপাতত ওই অংশটির জন্য গার্ডার তৈরির কাজ চলছে অন্যত্র। সিআরএস থেকে সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেলেই সেটিকে পিলারের উপর বসানো হবে। নির্মাণকারী সংস্থাকে দ্রুতগতিতে কাজ করে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই প্রকল্প শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। আর তা বাস্তব হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে উন্নয়নের তালিকায় যুক্ত হবে আরও একটি পালক।