দলবিরোধী সুর কৃষ্ণ -জোয়েলের, ভাঙনের আশঙ্কা বিজেপির অন্দরে
একুশের নির্বাচনের পর থেকেই সংগঠনে ভাঙন শুরু হয়েছিল বিজেপির। এবার তা বিধায়ক ভাঙনে গিয়ে ঠেকেছে। তা বেশ দুশ্চিন্তার বঙ্গ–বিজেপির কাছে। এখন ৭৬ থেকে সংখ্যা ৭১ নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া এবং দলের বিরুদ্ধে বেসুরো গাওয়া বাড়তি ভাঙনের জল্পনা তৈরি করেছিল। এবার তাঁর পাশে দাঁড়ালেন মালদহের হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জোয়েল মুর্মু। ইতিমধ্যেই কৃষ্ণ নয়াদিল্লিতে গিয়ে বাসুদেব সরকার–দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকে এসেছেন।
এখানের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে থেকে তিনি কাজ করতে পারছেন না। বীতশ্রদ্ধ লাগছে। তাই তিনি নিজেকে সব কর্মসূচি থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন। কিন্তু শনিবার দেখা গেল, কৃষ্ণ রায়গঞ্জ ব্লকের বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের মধুপুরে রুটি–তরকারি বিলি করছেন। মানুষ তা নিয়েও যাচ্ছে। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, তাঁর পাশেই দাঁড়িয়ে খাবার বিলি করছিলেন হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জোয়েল মুর্মু। তাহলে কী একসঙ্গে দল ছাড়ছেন তাঁরা? উঠছে প্রশ্ন।
এই ঘটনা যখন প্রকাশ্যে এসেছে তখন আরও একটি ঘটনা ঘটে। সেটা হল, টিটাগড় পুরসভার দুই ওয়ার্ড কো–অর্ডিনেটর–সহ কয়েকশো বিজেপি কর্মী তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। এদের অনেকেই নাকি কৃষ্ণ ও জোয়েলের ঘনিষ্ঠ। আর জোয়েল–কৃষ্ণ কাছাকাছি আসায় সমীকরণ বদলাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
এই বিষয়ে জোয়েল বলেন, ‘উনি দলে কাজ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আঘাত পেয়েছেন। দলের রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সমস্যাটি নিয়ে কথা বলব।’ অর্থাৎ তাঁরা একমঞ্চে এসেছেন এটা কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন। আর দলকে বলে যদি কাজ না হয় তাহলে ভাঙন যে অনিবার্য তা এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট। সম্প্রতি বিজেপির উত্তরবঙ্গের বিধায়কদের সম্মেলনে অনুপস্থিত ছিলেন জোয়েল। এবারে বেসুরো কৃষ্ণের কাছাকাছি আসায় ভাঙনের বাড়তি ইন্ধন জুগিয়েছেন তিনি বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে ভিন্ন সুর শোনা যায় বিজেপির মালদহের জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডলের গলায়। তিনি বলেন, ‘জোয়েলবাবু কৃষ্ণবাবুকে মূলস্ত্রোতে ফেরাতে রায়গঞ্জে গিয়েছেন বলে আমার ধারণা।’ তাহলে কৃষ্ণ তৃণমূল কংগ্রেসে যাচ্ছেন? অনুগামীদের কৃষ্ণ বলেন, ‘আমি জেলায় দলের সমস্ত কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। আমি তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরলে আপনাদের জানিয়েই ফিরব।’